দেশি মুরগি পালন পদ্ধতি - দেশি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়
যতদিন যাচ্ছে আমাদের দেশে বেকারের সংখ্যা তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার বেকারত্ব দূর করতে চান তাহলে মুরগি পালন শুরু করতে পারেন। বেকারত্ব তা দূরীকরণের পাশাপাশি মুরগি পালন আমাদের স্বাবলম্বী করে তোলে। আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা স্বল্প আকারে দেশি মুরগি পালনের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জানতে চান। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি জুড়ে আমি সঠিক দেশি মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরব।
আপনি যে মুরগি পালন করেন না কেন সঠিক পালন পদ্ধতি সম্পর্কে না জানলে আপনি লাভবান হতে পারবেন না। তাই সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে কি পালন করা শুরু করা উচিত। আজকের এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আশা করি আপনি সঠিক দেশি মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন।
ভূমিকা
দিন দিন আমাদের দেশে মুরগির মাংসের চাহিদা এবং মুরগির ডিমের চাহিদা বেড়েই চলেছে। যার কারণে মানুষেরা বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করছেন মুরগির খামার। সঠিক পদ্ধতিতে মুরগি পালন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি খুব ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করছে। তাই আপনি যদি বেকার হয়ে থাকেন এবং আপনার কাছে কোন কাজ না থেকে থাকে। তাহলে মুরগি পালন শুরু করে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলুন।
হয়তো আপনি নতুন করে অন্যান্য মুরগি পালনের আশা বাদ দিয়ে দেশি মুরগি পালন করতে চান। তাই আপনার সুবিধার খাতিরে এই সম্পন্ন পোস্টের মধ্যে আমি দেশি মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে সকল তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করব। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আপনি দেশি মুরগি পালনের সকল উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলন শুরু করা যাক।
দেশি মুরগি পালন পদ্ধতি
বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে দেশী মুরগি পালনের বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় তিনটি উপায় রয়েছে।যেমন,
- সম্পন্ন খোলামেলা পরিবেশে
- আবদ্ধ অবস্থায়
- এবং আংশিক আবদ্ধ অবস্থায় ইত্যাদি
আমরা সকলেই জানি যে, সাধারণত দেশি মুরগিকে খোলামেলা পরিবেশে পালন করা হয়ে থাকে। তবে ব্যবসায়িক উপায়ে দেশি মুরগিকে খোলা ভাবে পালন করলে তেমন একটা লাভ আশা করা যায় না। আবার, দেশি মুরগি অত্যন্ত চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ার কারণে এরা সব সময় চড়ে বেড়াতে পছন্দ করে। সেক্ষেত্রে চঞ্চল এবং চড়ে বেড়ানো প্রকৃতি হওয়ার কারণে এদেরকে যদি আপনি সম্পূর্ণ আবদ্ধ ভাবে পালন করতে চান সেটিও সঠিক উপায় বলে গণ্য করা হবে না।
আপনি যদি সম্পূর্ণ আবদ্ধ আবে দেশি মুরগি পালন করেন তাহলে আপনি মুরগির গুণগত মান এবং ওজন পাবেন না। এতে করে আপনার মুরগি পালনে লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেশি দাঁড়াবে। সে ক্ষেত্রে আপনি চাইলে আংশিক আবদ্ধ অবস্থায় দেশি মুরগি পালন করতে পারেন। মূলত এর সঠিক উপায়টি হচ্ছে, আপনি মুরগির জন্য একটি বড় করে টিনশেড দিয়ে মুরগির জন্যে বড় ঘর তৈরি করলেন।
বড় ঘর হওয়ার কারণে মুরগির চড়ে বেড়াতে সুবিধা হবে। এর পরবর্তীতে আপনি যেই কাজটি করবেন কাজটি হচ্ছে, দিনের একটি সময়ে আপনার খামারের সকল মুরগিকে উন্মুক্ত করে দিবেন। যাতে করে মুরগিরা বাহিরে বের হয়ে মাটি থেকে যাদের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল সংগ্রহ করতে পারে।
এতে করে আপনার সুবিধা হবে। মুরগি যদি দিনের একটি সময়ে বাহিরে বেরিয়ে তাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল সংগ্রহ করে তাহলে স্বাভাবিকের তুলনায় মুরগির রোগ কম হওয়ার পাশাপাশি আপনার খাবার খরচ অনেকটা কমে যাবে। তাহলে আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন কি উপায়ে দেশি মুরগি পালন করলে এটি আপনার জন্য লাভবান হয়ে দাঁড়াবে। চলুন আরো কিছু তথ্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
সঠিকভাবে দেশি মুরগির ঘর প্রস্তুত
মুরগি পালনে সঠিকভাবে মুরগির ঘর প্রস্তুত করা খুবই জরুরী। শুরুতেই পূর্ব এবং পশ্চিম বরাবর লম্বা ঘর তৈরি করতে হবে দেশি মুরগি পালনের ক্ষেত্রে। সাধারণত ঘরের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫০ ফুট হতে হবে অথবা আপনি চাইলে মুরগির চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করতে পারেন। এর পরবর্তীতে মুরগির ঘরের প্রস্থ প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট লম্বা হতে হবে।
মূলত এই নিয়মে ঘর তৈরি করার পর আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে মুরগির ঘর যাতে মাটি থেকে এক ফুট উপরে হয়। পরবর্তীতে আপনার কাজ হবে, খামারের চারিদিক ভালোভাবে নেট দিয়ে ঘিরে দেওয়া। যাতে করে হিংস্র কোন প্রাণী খামারের মধ্যে প্রবেশ করে মুরগির কোন প্রকার ক্ষতি না করতে পারে। আপনি যদি মাঝারি আকারে ৫০০ দেশি মুরগি পালন করতে চান তাহলে আপনাকে প্রায় ৫০০ মুরগির জন্য ৪২৫ বর্গফুট জাইগা নির্বাচন করতে হবে।
সে ক্ষেত্রে একটি মুরগির জন্য জায়গা দাঁড়ায় ০.৮৫ বর্গফুট। আশা করি এই নিয়মে মুরগি পালন করতে পারবেন। তবে আপনি যদি ডিমের জন্যে মুরগি পালন করতে চান তাহলে প্রতি মুরগি হিসাব করে প্রায় ১.৫ বর্গফুট জায়গা নির্বাচন করতে হবে। আশা করি এই নিয়মে মুরগির ঘর তৈরি করলে আপনি লাভবান হতে পারবেন।
দেশি মুরগির জাত নির্বাচন
আপনি যেই মুরগি পালন করেন না কেন যদি সঠিক মুরগির জাত নির্বাচন না করতে পারেন তাহলে আপনি মুরগি পালনে লাভবান হতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সঠিক মুরগির জাত নির্বাচন করতে হবে। বর্তমান বাজারে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী রয়েছে যারা যুক্ত মুরগির জাত অথবা বাচ্চা বিক্রি করে থাকে।
তাই বাচ্চা সময় অবশ্যই আপনি চেষ্টা করবেন যে কোন সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বাচ্চা নেওয়ার। সরকারি প্রতিষ্ঠানে হয়তো বাচ্চার দাম একটু বেশি লাগতে পারে কিন্তু আপনি সঠিক এবং ভেজাল মুক্ত বাচ্চা পাবেন। বর্তমানে আমাদের দেশে দেশি মুরগির বেশ কয়েকটি জাত রয়েছে। যেমন,
- হিলি
- গলাছিলা
- অসীল
- সহ কমন দেশি মুরগির জাত
দেশি মুরগির বাচ্চা পালন পদ্ধতি
মূলত আমরা মুরগি পালন করতে গেলে আমাদের খামারে মুরগির বাচ্চা ক্রয় করে নিয়ে আসি। সে ক্ষেত্রে সঠিক বাচ্চা পালন পদ্ধতি জানা আমাদের জন্য খুবই জরুরী। আপনার খামারে বাচ্চা ক্রয় করে নিয়ে আসার আগে প্রথমত আপনাকে ব্রুডার ঘরে যেসব জিনিসপত্র রয়েছে সবগুলোকে সুন্দরভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। যাতে করে কোন প্রকারের ভাইরাস অথবা জীবাণু না থেকে যায়।
ভাইরাস এবং জীবাণু থেকে গেলে মুরগির বাচ্চা অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এর পরবর্তীতে আপনি যখন খামারে বাচ্চা আনবেন ঠিক তার ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে খামারে খাবারের জায়গায় খাবার পাত্র এবং পানির জায়গায় পানির পাত্র বসিয়ে দিতে হবে। এর পাশাপাশি ঘরের তাপমাত্রা ঠিক আছে কিনা সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
মূলত খামারে বাচ্চা আনার পর দুই থেকে তিন ঘন্টা শুধুমাত্র বাচ্চাদের সাদা পানি দিতে হবে। আর খেয়াল রাখতে হবে যে বাচ্চা গুলো একটু দুর্বল হয়ে আছে। সেই বাচ্চাগুলোদের আলাদা করে এক জায়গায় নিয়ে একটি পানির পাত্রে গ্লুকোজ মিশিয়ে খেতে দিতে হবে। যাতে করে বাচ্চারা তাদের সঠিক শরীরের শক্তি ফিরে পায়। এর পরবর্তীতে আপনার কাজ হবে বাচ্চা আনার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর তাদের খাবার দেওয়া।
বাচ্চা যদি অতিরিক্ত আকারে ছোট হয়ে থাকে তাহলে প্রথমত তাদেরকে খাবার পাত্রে না দিয়ে পেপারে ছিটিয়ে দিতে হবে। যাতে করে বাচ্চাদের খাবার পেতে সুবিধা হয়। পরবর্তীতে আপনি খাবার পাত্রে খাবার দিতে পারেন। মূলত এরপরে আপনার কাজ হচ্ছে, কিছুক্ষণ পরপর খেয়াল রাখতে হবে যে বাচ্চাদের তার কম অথবা বেশি হচ্ছে কিনা। কোন বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়ছে কিনা অথবা কোন বাচ্চা যদি মারা যায় তাহলে খুব দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে।
তার পাশাপাশি বাচ্চাদের পায়ের নিচে যে পেপারগুলো বিছিয়ে দিয়েছেন সেগুলো ভিজিয়ে গেলে সরিয়ে ফেলতে হবে এবং পানি ও খাবার শেষ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে সেগুলো আবার পুনরায় দিয়ে দিতে হবে। সর্বশেষ প্রতি চব্বিশ ঘন্টা অন্তর অন্তর বাচ্চাদের ব্যবহার করার প্রেপার ফেলে দিয়ে নতুন পেপার দিতে হবে।
দেশী মুরগীর খাদ্য তালিকা
আপনি যেই মুরগি পালন করেন না কেন মুরগির খাবার খরচ যত কম হবে মুরগি পালনে ততো লাভ করতে পারবেন।দেশি মুরগি পালনের ক্ষেত্রে মুরগির খরচ কমাই আনা খুবি দরকার।খাবারের খরচ কমিয়ে আনার জন্য আপনাকে বাজারের সোনালি ফিডের পাশাপাশি বিভিন্ন দানাদার খাবার দিতে হবে।এতে করে মুরগির খাবার খরচ কমে আসবে।মুরগির খাবার খরচ কমানোর আরেকটি উপায় রয়েছে যেমন,দেশি মুরগি কে দিনের একটি সময় বাহিরে ছেড়ে দিতে হবে।
জাতে করে মুরগি বাহিরে থেকে বিভিন্ন লতা-পাতা,শাকসবজি একাই খেতে পারে।এর পাশাপাশি মুরগিকে যদি বাহিরে ছেড়ে দেন তাহলে মুরগি তার প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল সংগ্রহ করতে পারবে।যার কারনে মুরগির খাবার কম লাগার পাশাপাশি মুরগির রোগ কম দেখা দিবে।মুরগিকে কখনই শুধু ফীড খাওয়ানো যাবে না।আপনি যদি মুরগিকে শুধু ফীড খাওান তাহলে মুরগির গুনগত মান নষ্ট হয়ে যায়।
তার সাথে সাথে মুরগির মাংশের সঠিক স্বাদ পাওয়া যাই না এবং মুরগির গুনগত বৈশিষ্ট্য নষ্ট হয়ে যায়।এই কারনে মুরগি বিক্রি করার সময় সঠিক বাজার মূল্য পাওয়া যায় না।আপনি চাইলে ৬০ ভাগ ফীড এবং ৪০ ভাগ দানাদার খাবার খাওয়াতে পারেন।এতে করে মুরগির সথিক ওজন পাওয়ার সাথে সাথে মুরগির রোগ কম দেখা দিবে।আপনার মাথাই এখন চিন্তা আসতে পারে যে,মুরগি কে কি দানাদার খাবার দিলে ভাল হবে।আমি নিচে মুরগির জন্য সঠিক দানাদার খাবারের নাম উল্লেখ করছি।যেমন,
- ধান
- গম
- চালের খুদ
- বিভিন্ন ডাল
- ভুট্টা ভাঙ্গা
- শষ্যদানা ইত্যাদি
আপনি চাইলে ওপরের দেখানো দানাদার খাবারগুলো আপনার খামারের মুরগি কে খাওয়াতে পারেন।এতে করে আশাকরি মুরগির সঠিক ওজন পাবেন এবং সঠিক বাজার মূল্য পাবেন।
দেশী মুরগী পালনের ব্যাবসায়ীক হিসাব
আমি নিচে প্রায় ৫০০ দেশি মুরগি পালনের হিসাব তুলে ধরছি।আশা করি আপনি মুরগি পালনের একটা আনুমানিক হিযাব যাবেন।
ঘর এবং অন্যান্য খরচ
৫০০ দেশি মুরগি পালনে খরচের হিসাব
ওপরে আমি আনুমানিক খরচ তুলে ধরেছি।তবে বাজারের ঊর্ধ্বগতির জন্য দাম কম এবং বেশি হতে পারে।যার কারনে আমি খরচটা আনুমানিক হিসাবে করেছি।আশাকরি এই হিসাব দেখে আপনার ধারনা হয়ে যাবে আপনি যদি ৫,০০ মুরগি পালন করতে যান তাহলে ঠিক কত টাকা আপনার খরচ করতে হবে।
দেশি মুরগির রোগ ও চিকিৎসা
অন্যান্য মুরগির চেয়ে দেশি মুরগির রোগ বালাই কম হয়ে থাকে।মুলত আবহাওয়া অথবা পরিবেশের সাথে খাপ না খাইলে মুরগির রোগ হতে পারে।যদি আপনি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার দেন এবং তার পাশাপাশি খাবারের পাত্রগুলা সব সময় পরিস্কার রাখলে মুরগির রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে জায়।বিশেষ করে পানির পাত্র পরিস্কার রাখলে রোগ কমে যায়।চলুন দেশি মুরগির কিছু রোগ এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিয়া যাক।যেমন,
- রক্ত আমাশয়
- রানীক্ষেত
- ফাউল পক্স
- গামবোরো
- ফাউল কলেরা
রক্ত আমাশয়
দেশি মুরগির সকল রোগ এর মধ্যে রক্ত আমাশয় অন্যতম।সাধানত দেশি মুরগির এই রোগ বেশি পরিমানে দেখা দেয়।কমবেশি সকল বয়স এর মুরগি এই রোগ দেখা দেয়।তবে বাচ্চা মুরগির রক্ত আমাশয় বেশি দেখা দেয় এবং বেশি ক্ষতি করে থাকে।মূলত মুরগির বিষ্ঠার মাধ্যমে রক্ত আমাশয় রোগটি মুরগির মাঝে ছড়িয়ে পড়ে।
চিকিৎসাঃ উক্ত রোগ মুরগির দেখা দিলে ভয় পাওয়ার দরকার নেই।নিজেকে শান্ত রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী টল্ট্রাজুরিল অথবা এম্প্রোলিয়ায়ম জাতীয় ঔষধ ব্যাবহার করতে পারেন।এতে করে আশা করা যায় মুরগির রোগ ভালো হয়ে যাবে।
রানীক্ষেত
অন্যান্য মুরগির তুলনায় দেশি মুরগির রানীক্ষেত রোগটি খুবি বেশি পরিমানে দেখা যায়।যদি দেখেন আপনার মুরগি হটাত করে খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।তাহলে এটা রানীক্ষেত রোগ এর লক্ষন।তার পাশা পাশি যদি দেখেন মুরগি গুলা মাথা নিছু করে ঝিমাতে শুরু করেছে এবং মাঝে মাঝে চুনের মতো পায়খানা করছে।এর পরেও নাক দিয়ে সর্দি ও মুখ দিয়ে লালা ঝরে তাহলে বুজবেন রানীক্ষেত রোগ দেখা দিয়েছে।
চিকিৎসাঃ আপনি যদি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত টিকা প্রদান করেন তাহলে রাণীক্ষেত রোগ থেকে খুব সহজে মুক্তি পাওয়া যায়।
ফাউল পক্স
মূলত মুরগির ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ হোল ফাউল পক্স।সাধানত যেকোনো বয়স এর মুরগির এই রোগ দেখা দিতে পারে।তবে বাকি রোগের থেকে ফাউল পক্স রোগ ভয়ানক হয়ে থাকে।যদি বাচ্চা অবস্থায় কোন মুরগির এই রোগ দেখা দেই তাহলে বেশিরভাগ মুরগির বাচ্চা মারা যাই।ফাউল পক্স রোগের লক্ষন গুলা হোল,শরীরের পালক বিহীন জায়গায় সাধারণত শক্ত গোটা উঠে ও চোখ দিয়ে পানি পড়ে তার সাথে সাথে মুরগির জ্বর আশে।
চিকিৎসাঃচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক সময়ে ফাউল-পক্স এর টিকা প্রদান করলে রোগ ভালো হয়ে যায়।
গামবোরো
সাধানত বিরনা নামক এক ভাইরাসের কারনে গামবোরো রোগ দেখা দেই।দেশি মুরগির এটি একটি ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ।এই রোগটি হলে মুরগি সাদা চুনের মতো পাইখানা করে।গ্রামের মানুষরা এই রোগ হলে বলে দেক মুরগির চুন রগ হয়েছে।মুরগি চুন এর মত পাইখানা করছে।
চিকিৎসাঃ গামবোরো রোগ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগের জন্য ভ্যাকসিন প্রদান করলে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
ফাউল কলেরা
আমরা সকলেই জানি যে,ফাউল কলেরা হোল একটি পানি বাহিত রোগ।এই রোগ দেখা দিলে মুরগি ঠিক পানির মতো পাইখানা করে।ফাউল কলেরা হলে মুরগি ডিম পাড়া বন্ধ করে দিয়ার পাশাপাশি খাবার খাওয়া কমিয়ে দেই।
চিকিৎসাঃফাউল কলেরা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সালফার জাতীয় ড্রাগ অথবা বিভিন্ন সরকারি টিকা প্রদান করলে ফাউল কলেরা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।এছাড়াও আপনি চাইলে প্রোবায়োটিকের মাধ্যমে ফাউল কলেরা রোগ নিয়ন্ত্রন করতে পারেন।
দেশি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়
দেশি মুরগির জাতভেদ অনুযায়ী দেশি মুরগি প্রায় ৫ থেকে সাড়ে পাঁচ মাস বয়সে ডিম দিতে সুরু করে।তবে খাবারের তারতম্যের কারনে অথবা পুষ্টির কম বেশির কারনে মুরগির ডিম দিয়ার সময়ের কম বেশি হতে পারে।যদি আপনি মুরগিকে পুষ্টিযুক্ত খাবার দেন তাহলে আরও আগে থেকে মুরগি ডিম দিয়া সুরু করতে পারে।আপনি যদি ভালো জাতের দেশি মুরগি পালন করেন তাহলে প্রায় ২ বছর বা তার অধিক সময় পর্যন্ত মুরগি থেকে ডিম সংগ্রহ করতে পারবেন।
তবে ২ বছরের পর থেকে মুরগির ডিম দিয়ার ক্ষমতা কমতে থাকে। অর্থাৎ,মুরগি ডিম কমতে থাকে।ভালো জাত অনুযায়ী দেশি মুরগি প্রায় ১৬০ থেকে ১৮০টি ডিম দিয়ে থাকে।মূলত মুরগি ১৫ থেকে ২০ টা ডিম দিয়ার পর থেকে কুচা ধরে।তাই বেশি ডিম পেতে গেলে অবশ্যই মুরগির কুচা ভেঙ্গে দিতে হবে।আর কুচা ভাঙার জন্য মুরগিকে ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার দেওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার প্রদান করতে হবে।
দেশি মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর FAQ
প্রশ্নঃ মুরগি পালন কিভাবে করে?
উত্তরঃ বিভিন্ন উপায়ে মুরগি পালন করা যায়। যেমন,
- আবদ্ধ পদ্ধতিতে
- সম্পূর্ণ খোলা পরিবেশে
- মাচা তৈরি করে
- এবং অর্ধ আবদ্ধ পদ্ধতিতে ইত্যাদি
প্রশ্নঃ মুরগি কত বছর বাঁচে?
উত্তরঃ প্রায় ছয় বছর বা তার বেশি।
প্রশ্নঃ দেশি মুরগির মাংস খেলে কি হয়?
উত্তরঃ দেশি মুরগির মাংস খেলে দেহের ওজন কমেতে শুরু করে।
প্রশ্নঃ দেশি মুরগি চেনার উপায়?
উত্তরঃমুরগির হাড় গুঁড়ো করে। কারণ অন্যান্য মুরগির থেকে দেশি মুরগির হাড় শক্ত হয়ে থাকে।
প্রশ্নঃ মুরগির সবচেয়ে ভালো খাবার কোনটি?
উত্তরঃ মুরগির বেশ কয়েকটি ভালো খাবার রয়েছে। যেমন,
- স্ট্রবেরি
- তরমুজ
- এবং ব্লুবেরি
প্রশ্নঃ দেশি মুরগিতে কি কোলেস্টেরল বেশি?
উত্তরঃ দেশি মুরগিতে কম কোলেস্টেরল থাকে।
লেখকের মন্তব্য
এই সম্পূর্ণ পোস্টটি জুড়ে আমি দেশি মুরগি পালন পদ্ধতি - দেশি মুরগি কত দিনে ডিম দেয় সেই বিষয়ে সকল তথ্য আপনাদের মাঝে উল্লেখ করেছি। আশা করছি এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত তথ্য পেয়ে গেছেন। এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন এবং নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য পেতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url