হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি - ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময়
ভুট্টা আমাদের খুবি পরিচিত একটি নাম।আমাদের দেশে অনেক মানুষ বিভিন্ন জাতের ভুট্টা চাষ করে থাকেন।আবার অনেক মানুষ আছেন যারা হাইব্রিড ভুট্টা চাষ করতে চান।কিন্তু হাজারো খুজে বেড়ানোর পরেও সঠিক হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে কোন তথ্য খুজে পান না।তাহলে এই পোস্ট আপনার জন্য।এই সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমি হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি এবং ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময় নিয়ে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।
তাই আপনি যদি সঠিক উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে ভুট্টা চাষ করে অধিক ফলন এবং লাভমান হতে চান তাহলে আমাদের সাথেই থাকুন।
ভুমিকা
শুরুতেই আপনাদের জানাতে চাই যে, হাইব্রিড ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময় হোল খরিফ ও রবি মৌসুম।মুলত খরিফ মৌসুম বলতে জুন-জুলাই মাস এবং রবি মৌসুম বলতে অক্টোবর-নভেম্বরে মাস।এই সময়টাতে ভুট্টার বীজ বপন করা হয়ে থাকে।আমাদের দেশে হাইব্রিড ভুট্টা চাষ করা খুবি লাভমান।ফলন বেশি হওয়ার কারনে লাভ বেশি হয়।এক্ষেত্রে সঠিক সময় এবং পদ্ধতি অনুসরণ করলে ভালো পরিমানে উৎপাদন করা সম্ভব।
তবে আপনাকে ভুট্টা চাষের জন্য দোআঁশ মাটি বেছে নিতে হবে।কারন ভুট্টা চাষ এর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত মাটি হোল দোআঁশ মাটি।তার পাশাপাশি আপনি খেয়াল রাখবেন যাতে করে মাটির pH মান ৫.৫-৭.৫ থাকে।জমি চাষ করার সময় একবার গভীর চাষ এবং দুবার মাঝারি চাষ করবেন।পরবর্তীতে আপনি বীজ বপনের আগে জমিতে ভালো করে জৈব সার প্রয়োগ করবেন।
আপনি খেয়াল রাখবেন হাইব্রিড ভুট্টার বীজ জাতে করে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর হয়।তার পাশাপাশি ভালো ফলন আনতে আপনাকে সঠিক জলসেচ এবং পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।এখন আপনি আশা করি কিছু তথ্য সম্পর্কে জানতে পারলেন।চলুন এখন হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে সকল তথ্য বিস্তারিত ভাবে জেনে নিয়া যাক।
হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি
হাইব্রিড ভুট্টা চাষ কৃষি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।হাইব্রিড ভুট্টা উচ্চ ফলনশীল তার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধী।বত্তমান সময়ে অনেক কৃষক আছেন যারা হাইব্রিড ভুট্টা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে ভুট্টা চাষ করতে পারলে ভালো পরিমানে লাভ করা যায়।চলুন ভুট্টা সম্পর্কিত সকল তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিয়া যাক।
হাইব্রিড ভুট্টার বৈশিষ্ট্য
হাইব্রিড ভুট্টার বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।আমি নিচে সেই বৈশিষ্ট্য গুলা উল্লেখ করছি।যেমন,
- উচ্চ ফলনশীলতাঃ হাইব্রিড ভুট্টা সাধারণত উচ্চ ফলন জাত।সাধারণ ভুট্টার চেয়ে এই ভুট্টার বেশি ফলন হয়।
- রোগ প্রতিরোধঃ অন্যান্য ভুট্টার জাতের তুলনায় হাইব্রিড ভুট্টার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে।যার কারনে হাইব্রিড ভুট্টা চাষ করে আপনি ভাল পরিমানে লাভ করতে পারবেন।
- স্বল্প সময়ের ফসলঃ মূলত হাইব্রিড ভুট্টা খুব দ্রুত পরিপক্ক হয়ে যায়।যার কারনে আপনি খুবি অল্প সময়ে চাষ সম্পূর্ণ করে ফসল বাজারজাত করতে পারবেন।
ভুট্টা চাষের গুরুত্ব
ভুট্টা চাষ আমাদের দেশের কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।ভুট্টা মূলত আমাদের খাদ্যসহ পশুদের খাদ্য হিসেবে ব্যাবহার করা হয়।অন্যান্য জাতের তুলনায় হাইব্রিড ভুট্টা চাষ কৃষকদেরকে লাভমান করে তুলে।
গুরুত্ব বিবরণ
খাদ্য উৎস ভুট্টা মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যাবহার করা হয়ে থাকে।
পশুখাদ্য মানুষের পাশাপাশি ভুট্টা পশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যাবহার করা হয়।
আর্থিক উন্নতি ভুট্টা চাষ কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
মাটির প্রয়োজনীয়তা
হাইব্রিড ভুট্টা চাষের সাফল্যের জন্য মাটির প্রয়োজনীয়তা খুবি জরুরি।তার কারন সঠিক মাটি নির্বাচন এবং মাটি প্রস্তুতি ভুট্টা চাষের ফলন বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।আমি নিচে ভুট্টা চাষে মাটির প্রয়োজনীয়তাশ আলোচনা করব।যেমন,
মাটি নির্বাচন
আমরা অনেকেই জানি না যে, ভুট্টা চাষের জন্য উর্বর এবং জলনিকাশের উপযুক্ত মাটি প্রয়োজন হয়ে থাকে।মাটির ক্ষেত্রে আপনি দো-আঁশ অথবা বেলে দো-আঁশ মাটি বেছে নিতে হবে।মাটির pH মান ৫.৫-৭.৫ এর মধ্যে থাকতে হবে।
মাটি প্রস্তুতি
ভুট্টা চাষ করতে গেলে মাটি ভাল করে প্রস্তুত করা খুবি জরুরি।যার কারণে প্রথম ধাপে জমি গভীর চাষ করা খুবি গুরুত্বপূর্ণ।গভীর ভাবে জমি চাষ করলে মাটির নিচের স্তরের পুষ্টি উপরে উঠে আসে।শেষে জমি চাষের পর অবশ্যই জৈব সার এবং পুষ্টি উপাদান মাটিতে মেশাতে হবে।
পদক্ষেপ বর্ণনা
প্রথম চাষ গভীর চাষ করে মাটি আলগা করতে হবে।
জৈব সার প্রয়োগ প্রতি বিঘায় অন্তত ১থেকে ২ টন জৈব সার মেশাতে হবে।
পুষ্টি উপাদান মাটিতে প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন,ফসফরাস,পটাশ মেশাতে হবে।
সহজ কথায় বলতে গেলে প্রথমে মাটি ভালোভাবে চাষ করতে হবে।তারপর জৈব সার এবং পুষ্টি উপাদান মেশাতে হবে।তার পাশাপাশি আপনাকে মাটির পিএইচ মান নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে হবে।এইভাবে মাটি প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে আপনার জমি হাইব্রিড ভুট্টার বীজ বপন করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।
বীজ বপনের সময়
হাইব্রিড ভুট্টা চাষে বীজ বপনের সঠিক সময় নির্বাচন করা খুবি গুরুত্বপূর্ণ।মূলত আপনি যদি সঠিক সময়ে বীজ বপন করেন তাহলে ভালো ফলন পাবেন।আমি নিচে ভুট্টার বীজ বপনের সঠিক সময় তুলে ধরব।
উপযুক্ত সময় নির্বাচন
ভুট্টা চাষের জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করা জরুরি।মূলত আবহাওয়া ও মাটির অবস্থা বিবেচনা করে বীজ বপনের সময় নির্ধারণ করতে হয়।এক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে বীজ বপন করা সব থেকে ভালো।তার কারন উক্ত সময়ে মাটির তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা ভুট্টা চাষের জন্য উপযুক্ত থাকে।
বীজ বপনের পদ্ধতি
আপনি যদি বীজ বপনের পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করেন তাহলে ফলন ভাল হবে।আমি নিচে বীজ বপন পদ্ধতি তুলে ধরলাম।যেমন,- প্রথমে মাটি ভালোভাবে চাষ করে নিন।
- প্লট তৈরির পর প্রতি ২০ থেকে ৩০ সেমি দূরত্বে বীজ বপন করুন।
- প্রতি গর্তে ২ থেকে ৩টি বীজ বপন করুন।
- বীজের উপর হালকা মাটি দিয়ে ঢেকে দিন।
- প্রতিদিন জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি দিন।
ভুট্টার বীজ প্রতি হেক্টরে ২০ কেজি
জৈব সার প্রতি হেক্টরে ১০০ কেজি
কীটনাশক প্রয়োজন অনুযায়ী
তাই ভুট্টার সঠিক ফলন আনতে ওপরের দেখানো নিয়মগুলো মেনে চলুন।নিয়ম মেনে চললে আশা করি আপনি ভালো পরিমানে লাভ করতে পারবেন।
সার প্রয়োগ
সাধারণত ভুট্টা চাষে সার প্রয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়।সঠিক নিয়ম অনুযায়ী সার প্রয়োগ করলে ভাল ফলন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।আমি নিচে হাইব্রিড ভুট্টা চাষে সার প্রয়োগের ধাপগুলি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
প্রাথমিক সার প্রয়োগ
মুলত প্রাথমিক ভাবে সার প্রয়োগ করতে হয় জমি চাষের আগে।যার কারনে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।প্রাথমিক ভাবে মূলত নাইট্রোজেন,ফসফরাস এবং পটাশ সমৃদ্ধ সার প্রয়োগ করতে হয়।যেমন,
- নাইট্রোজেনঃ ১০০ কেজি প্রতি হেক্টরে।
- ফসফরাসঃ ৫০ কেজি প্রতি হেক্টরে।
- পটাশঃ ৬০ কেজি প্রতি হেক্টরে।
প্রথম ধাপ সম্পূর্ণ করতে ওপরের নিয়ম অনুযায়ী সার প্রয়োগ করুন।
পুনরায় সার প্রয়োগ
প্রথম ধাপ শেষে পুনরায় আবার জমিতে সার প্রয়োগ করতে হবে।এক্ষেত্রে ৩০ দিন পর পুনরায় জমিতে সার প্রয়োগ করতে হয়।সার প্রয়োগ করলে গাছের বৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পায়।পুনরায় সার প্রয়োগের জন্য নিচের মাত্রা অনুসরণ করুন।যেমন,
সার পরিমাণ (কেজি/হেক্টর)
নাইট্রোজেন ৫০ কেজি
পটাশ ৩০ কেজি
সঠিক ফলন আনতে অবশ্যই সঠিক নিয়ম মেনে পুনরায় সার প্রয়োগ করুন।
সেচ ব্যবস্থাপনা
হাইব্রিড ভুট্টা চাষে সেচ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সেচ প্রদান করলে সঠিক ফলন পাওয়া যায়।যদি আপনি সেচ ব্যবস্থাপনা সঠিক নিয়ম না মেনে করেন তাহলে ভুট্টা গাছের সঠিক বৃদ্ধি নাও হতে পারে।
সেচের সময়
হাইব্রিড ভুট্টা চাষে সেচের সঠিক সময় জানা খুবই জরুরি বিষয়।অবশ্যই সঠিক সময় জেনে সেচ দিতে হবে।আমি নিচে সেচ দিয়ার সঠিক সময় তুলে ধরলাম।যেমন,
- বীজ বপনের পর প্রথম সেচঃ ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে দিতে হবে।
- দ্বিতীয় সেচঃ ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে।
- তৃতীয় সেচঃ ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে।
- চতুর্থ সেচঃ ফুল আসার সময়।
- পঞ্চম সেচঃ দানা পাকানোর সময়।
আমি ওপরে সঠিক সেচের সময় তুলে ধরেছি।তাই ফলন ভাল আনতে অবশ্যয় ওপরের তুলে ধরা নিয়ম মেনে চলুন।
সেচের পদ্ধতি
সেচের পদ্ধতি সঠিকভাবে পালন করলে সঠিক ফলন পাওয়া যায়।
- ড্রিপ সেচঃ ভুট্টা চাষের ক্ষেত্রে ড্রিপ সেচ পদ্ধতি সবচেয়ে কার্যকরী উপায়।
- ফুরো সেচঃ আবার আপনি চাইলে ফুরো সেচ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
- স্প্রিংকলার সেচঃ স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতেও ভালো ফল পাওয়া যায়।
সেচের পদ্ধতি উপকারিতা
ড্রিপ সেচ পানি সংরক্ষণ এবং সমান বিতরণ করা যায়।
ফুরো সেচ পানি সংরক্ষণ এবং মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
স্প্রিংকলার সেচ সমান পানি বিতরণ এবং রোগ প্রতিরোধ করে।
সঠিক সেচ ব্যবস্থাপনা ভুট্টার ফলন বাড়াতে সাহায্য করে।তাই অবশ্যই সঠিক নিয়ম পালন করুন।
রোগ ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ
হাইব্রিড ভুট্টা চাষে রোগ ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।রোগ নিয়ন্ত্রণ না করলে ফসলের বড় ক্ষতি দেখা দিতে পারে। নিচে রোগ ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণের কিছু কার্যকর পদ্ধতি আলোচনা করা হলো।যেমন,
সাধারণ রোগ
ভুট্টা চাষে কিছু সাধারণ রোগ দেখা দিতে পারে।আর এই রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই সময়মতো রোগ নিরাময় করা খুবি জরুরি।নিচে কয়েকটি রোগের বিষয় তুলে ধরলাম।যেমন,
- পাতা ঝলসানো রোগঃ এই রোগ দেখা দিলে গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায়।যার ফলে ফলন কমে যায়।
- মক্কা রোগঃ উক্ত রোগ দেখা দিলে গাছের কান্ডে দাগ পড়ে এবং গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে।
- রুট রোটঃ এই রোগ হলে গাছের শিকড় পচে যায়।যার কারনে গাছ সহজেই মরে যায়।
পোকামাকড় প্রতিরোধ
ভুট্টা চাষে পোকামাকড়ের আক্রমণ খুবি বড় একটা সমস্যা।কিছু সাধারণ পোকামাকড় এবং তাদের প্রতিরোধের পদ্ধতি নিচে উল্লেখ করা হলো।যেমন,
পোকামাকড় লক্ষণ প্রতিরোধের পদ্ধতি
কর্ন বোরার পাতায় ছিদ্র করে সঠিক কীটনাশক ব্যবহার
আর্মিওয়ার্ম পাতা কেটে খায় প্রাকৃতিক শত্রু ব্যবহার
এফিড রস চুষে খায় সাবান পানি স্প্রে
ফসল সংগ্রহ
হাইব্রিড ভুট্টা চাষে ফসল সংগ্রহ একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।তার কারন সঠিক সময়ে এবং পদ্ধতিতে ফসল সংগ্রহ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।চলুন সঠিক সময় সম্পর্কে জেনে নিয়া যাক।
ফসল সংগ্রহের সময়
ভুট্টা পাকার পরে সঠিক সময়ে ফসল সংগ্রহ করা জরুরি। ভুট্টার গাছের পাতা শুকিয়ে গেলে এবং ভুট্টার দানা কঠিন হলে ফসল সংগ্রহ করতে হয়।এক্ষেত্রে আপনি চাইলে চাষের ১০০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করতে পারেন।
সংগ্রহের পদ্ধতি
ভুট্টা সংগ্রহের জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করা হয়। এগুলো সঠিকভাবে পালন করলে ফলন ভালো হয়। নিচে ধাপগুলো উল্লেখ করা হলো।যেমন,
- প্রথমে গাছের পাতা এবং কান্ড থেকে ভুট্টা আলাদা করতে হবে।
- ভুট্টার শিকড় থেকে কান্ড কেটে ফেলতে হবে।
- ভুট্টার দানা আলাদা করতে হাত বা মেশিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
- দানা শুকাতে রোদে রেখে দিতে হবে।
ধাপ বর্ণনা
ভুট্টা আলাদা করা গাছের পাতা ও কান্ড থেকে ভুট্টা আলাদা করতে হবে।
শিকড় কাটা ভুট্টার শিকড় থেকে কান্ড কেটে ফেলতে হবে।
দানা আলাদা করা হাত বা মেশিন দিয়ে ভুট্টার দানা আলাদা করতে হবে।
দানা শুকানো রোদে রেখে ভুট্টার দানা শুকাতে হবে।
ভুট্টা সংরক্ষণ
ভুট্টা সংরক্ষণ সঠিকভাবে না করলে ভুট্টার গুণাগুণ নষ্ট হয়ে জেতে পারে।তাই সঠিক সংরক্ষণ পদ্ধতি ভুট্টার স্থায়িত্ব বাড়ায় তার পাশাপাশি কৃষকদের আয় বাড়াতে সাহায্য করে।
সংরক্ষণের উপায়
ভুট্টা সংরক্ষণ করতে হলে কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়।যেমন,
- ভুট্টা শুকানোর পর তা ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
- শুকানোর সময় ভুট্টার আর্দ্রতা ১৪% এর নিচে রাখতে হবে।
- ভুট্টা সংরক্ষণ করতে শীতল ও শুষ্ক জায়গা বেছে নিবেন।
- বাতাস বন্ধ পাত্রে ভুট্টা সংরক্ষণ করতে হবে।
- পাত্রের মুখ ভালোভাবে বন্ধ রাখতে হবে।
- সংরক্ষণের সময় পোকামাকড় মুক্ত রাখার ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
বাজারজাতকরণ
ভুট্টা বাজারজাতকরণের জন্য নিচের কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে।যেমন,
- বাছাইঃ ভালো মানের ভুট্টা বাছাই করার চেষ্টা করবেন।
- প্যাকেজিংঃ ভুট্টা প্যাকেজিংয়ের সময় পরিষ্কার পাত্রে রাখার চেষ্টা করবেন।
- পরিবহনঃ পরিবহনের সময় ভুট্টা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই দিকে খেয়াল রাখবেন।
- বিপণনঃ আপনি চাইলে স্থানীয় বাজারে অথবা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ভুট্টা বিক্রি করতে পারেন।
পদ্ধতি উপকারিতা
আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ ভুট্টার স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়
শীতল স্থান পোকামাকড় থেকে সুরক্ষা
বাতাসবন্ধ পাত্র ভুট্টার গুণাগুণ বজায় থাকে
হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কিত সচরাচর জিজ্ঞাশা FAQ
প্রশ্নঃ এক বিঘা জমিতে কত মন ভুট্টা হয়?
উত্তরঃ প্রায় ৩৫ থেকে ৪৫ মণ।
প্রশ্নঃ ভুট্টা চাষে কি কি সার দিতে হয়?
উত্তরঃ যেমন,
- জিংক সালফেট ১০ থেকে ১৫কেজি
- বোরন সার ৫ থেকে ৭ কেজি
- গোবর সার ৫ টন
- উরিয়া সার
প্রশ্নঃ ভুট্টা কত দিনের ফসল?
উত্তরঃ যেমন,
- রবি মৌসুমে ১৩৫ থেকে ১৪৫ দিন
- খরিফ মৌসুমে ৯৫ থেকে ১০৫ দিন
প্রশ্নঃ উন্নত জাতের ভুট্টার নাম কি?
উত্তরঃ যেমন,
- বর্ণালী
- মোহর
- খৈ ভুট্টা
- এবং শুভ্রা ইত্যাদি
প্রশ্নঃ একর প্রতি ভুট্টার বুশেল গণনা?
উত্তরঃ ১,০০০ দ্বারা গুণ করতে হয়।
প্রশ্নঃ ভুট্টা কতবার সার দেয়?
উত্তরঃ সপ্তাহে দুবার
লেখকের মন্তব্য
এই সম্পূর্ণ পোস্ট জুড়ে আমি আপনাদের মাঝে হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি এবং ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময় সম্পর্কিত সকল তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি।আপনি যদি ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময় এবং পদ্ধতি অনুসরণ করেন তাহলে ভালো ফলন পেতে সক্ষম হবেন।আর হাইব্রিড ভুট্টা চাষে সঠিক পরিচর্যা এবং নিয়ম মেনে চলা খুবি গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো বীজ বপন তার সাথে সাথে সঠিক পরিচর্যা করলে লাভবান হওয়া সম্ভব।
তাই আমি বলব ভুট্টার উচ্চ ফলন এবং গুণগত মান ঠিক রাখতে সঠিক পদ্ধতি মেনে চলুন।আর সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার পর যদি আপনি আপনার কাংখিত তথ্য পেয়ে থাকেন এবং পোস্ট ভাল লাগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন।সর্বশেষ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url