খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস চেনার উপায় - খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন পদ্ধতি

বর্তমান সময়ে মানুষ মুরগি পালনের সাথে সাথে নতুন করে হাঁস পালন শুরু করছেন।হাঁসের ভালো বাজারমূল্য থাকায় খুব সহজে লাভমান হতে পারছেন।অনেকেই আছেন যারা খাকি ক্যাম্পবেল হাঁঁসের পালন শুরু করতে চাচ্ছেন।কিন্তু সঠিক তথ্য না জানার কারনে শুরু করতে পারছেন না।তাহলে এই পোস্ট আপনার জন্য।এই সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমি খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস চেনার উপায় এবং খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন পদ্ধতি তুলে ধরব।
খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস চেনার উপায় - খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন পদ্ধতি
তাই আপনি যদি সঠিক পদ্ধতি জেনে খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালনে লাভমান হতে চান তাহলে আমাদের সাথেই থাকুন।

ভুমিকা

শুরুতেই আপনাদের জানিয়ে দিতে চাই যে, হাঁসের গায়ের রং খাকি হওয়ার কারনে উক্ত হাঁসকে খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস বলা হয়ে থাকে।তবে ১৯০১ সালে ইংল্যান্ডের নানান জাতের হাঁসের মধ্যে সংকরায়ন ঘটিয়ে ক্যাম্পবেল নামের একজন মহিলা খাকি ক্যাম্পবেল জাতের হাঁসের উদ্ভাবন করেন।বর্তমানে আমাদের সময়ে হাঁস পালন খুবি লাভজনক এবং জনপ্রিয়।অনেক মানুষ বিভিন্ন জাতের হাঁসের খামার গড়ে তুলে লাভমান হচ্ছেন।

এক্ষেত্রে আপনিও চাচ্ছেন একটি লাভজনক হাঁসের খামার শুরু করতে।কিন্তু সঠিক তথ্যর অভাবে শুরু করতে পারছেন না।আর আপনাকে সঠিক তথ্য প্রদান করার জন্য আজকের সম্পূর্ণ পোস্ট জুড়ে খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস চেনার উপায় এবং খাকি ক্যাম্পবেল পালন সকল তথ্য বিস্তারিত ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।তাই সকল তথ্য সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।চলুন শুরু করা যাক।

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের প্রধান বৈশিষ্ট্য - খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস চেনার উপায়

আমরা হইত অনেকেই আছি যারা খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসকে দেশি হাঁসের সাথে গুলিয়ে ফেলি।কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যে, দেশি হাঁস সাধারণত ৫ থেকে ৬ মাস বয়স থেকে ডিম দিতে শুরু করে এবং ১ বছরে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ টি ডিম দিয়ে থাকে।অপরদিকে খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস ডিম দিতে শুরু করে ৪.৫ মাস পর থেকেই এবং ১ বছরে প্রায় ২৯০ থেকে ৩০০ টি ডিম দিয়ে থাকে।

তার পাশাপাশি প্রায় ১ থেকে ২ বছর টানা দিম দিতে সক্ষম খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস।আপনি হয়তো খেয়াল করে দেখবেন যে, দেশি হাঁসকে ডিম দিতে সাধারণত পুরুষ হাঁসের দরকার হয়।কিন্তু খাকি ক্যাম্পবেল কোন রকম পুরুষ ছাড়াই ডিম দিতে সক্ষম।অন্য জাতের হাঁসের মতো খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালনে তেমন একটা পানি অথবা জলাশয়ের দরকার লাগে না।হাঁসকে খাবার মতো পানি এবং হালকা গোসলের পানি ব্যাবহার করেই পালন করা যায়।

মুরগির মতোয় পুষ্টিতে ভরপুর হয় খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের মাংস।আর একটি বিষয় বলে রাখা ভালো অন্য হাঁসের তুলনায় খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস বেশি বড় এবং পুষ্টিকর ডিম দেয়।তার পাশাপাশি আপনি ডিম সংগ্রহ করা শেষ করে আবার ভালো বাজার মূল্য দিয়ে হাঁস বিক্রি করতে পারবেন।তাই আপনি যদি ডিমের জন্য একটি লাভজনক খামার করতে চান তাহলে খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের খামার শুরু করুন।

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের ঘর ব্যবস্থাপনা

শুরুতেই বলে দিই যে, আপনি যদি পুকুর অথবা জলাশয়ে হাঁস পালন করতে চান তাহলে আপনাকে শুধু মাত্র হাঁসকে রাতে থাকার জন্য একটি ঘর বানালে চলবে। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিটি হাঁসের জন্য প্রায় ২.৫ বর্গফুট জাইগা অনুযায়ী ঘর প্রস্তুত করতে হবে। কিন্তু আপনি যদি সম্পূর্ণ আবদ্ধ ভাবে হাঁস পালন করতে চান তাহলে প্রতিটি হাঁসের জন্য ৪ বর্গফুট জাইগা রাখতে হবে।

এর পরবর্তীতে ঘরের উচ্চতা আপনাকে ৫ ফুট রাখতে হবে। আপনি যদি আবদ্ধ পদ্ধতিতে হাঁস পালন করতে চান তাহলে কিছু পরিমাণে জায়গা ঘেরাও করে রাখতে হবে যাতে করে সেই জায়গাগুলোতে হাঁসগুলো চড়ে বেড়াতে পারে। আপনি চাইলে টিন দিয়ে ঘরের ছাউনি তৈরি করতে পারেন অথবা আপনি যদি খরচ কমাতে চান তাহলে খড় চাল তৈরি করুন।

অবশ্যই আপনাকে খামারের থেকে অন্তত এক থেকে দেড় হাত ছাওনি বড় রাখতে হবে যাতে করে হাঁসের খামারের মধ্যে কোন ধরনের বৃষ্টির পানি প্রবেশ করতে না পারে। ঘরের মেঝে এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যাতে করে পানি সম্পূর্ণ গড়ে চলে যায়। তার কারণ পানি গড়ে চলে না গেলে ঘর স্যাতসেঁতে হয়ে যাবে। যার কারনে হাসের বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে।

আপনি চাইলে স্যাতসেঁতে পরিবেশ দূর করতে পাকা মেজে তৈরি করতে পারেন অথবা খরচ কমানোর ক্ষেত্রে মাটির ওপরও করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে মাটিতে পালন করতে গেলে অবশ্যই মেঝে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এরপর পরবর্তীতে খামারের চারিপাশ নেট অথবা তার কাটার বেড়া দিয়ে দিতে পারেন।

যাতে করে বাহির থেকে কোন ধরনের হিংস্র প্রাণী খামারের মধ্যে প্রবেশ করতে না পারে এবং হাঁস খামারের বাহিরে বেরিয়ে যেতে না পারে। আপনাকে অবশ্যই খামারকে পূর্ব এবং পশ্চিম বরাবর করতে হবে যাতে করে হাঁসের খামারে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো এবং বাতাস প্রবেশ করে। মূলত হাঁস পালনে লাভবান হতে সঠিক খামার ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে প্রতিদিন রাতে যাতে খামারের দরজা বন্ধ থাকে।

কারণ খামারের দরজা খোলা থাকলে বিভিন্ন প্রকারের হিংস্র প্রাণী খামারে প্রবেশ করার ভয় থাকে। তাই অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

ঘরে খাকি ক্যাম্পবেল পালন

আপনি যদি পুকুর অথবা কোন প্রকারের জলাশয় ছাড়া খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন করতে চান তাহলে খুব সহজে পালন করতে পারেন। আপনি আবদ্ধ পদ্ধতিতে অথবা ঘরে পালন করতে চাইলে হাঁসকে পানির জন্য কোন সিমেন্ট অথবা প্লাস্টিকের পাত্রতে পানি সরবরাহ করতে পারেন। আর অবশ্যই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে পানির পাত্রের কানা মেঝে থেকে একটু উঁচুতে আছে কিনা।

এর কারণ যদি পানির পাত্র ঘরের মেঝের সমান হয় তাহলে খামারের ঘরের পরিবেশ নোংরা এবং অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠবে।এই ঝামেলা করতে না চান তাহলে আপনি খামারের মধ্যে দিয়ে একটি পাকা নালা তৈরি করে পানি সরবরাহ করতে পারেন। কিন্তু এই পদ্ধতিতে একটু বেশি পরিমাণে খরচ করতে হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি পাকা নালা করতে চাইলে, নালা প্রায় দেড় ফুট লম্বা এবং ৯ ইঞ্চি গভীর করতে হবে।

এর পাশাপাশি আপনাকে পানি পাল্টানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। কারণ অনেকদিন যাবত এক পানি রাখলে সেই পানি থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়াতে পারে। নিয়মিত যদি আপনি পানি পরিবর্তন করেন তাহলে কোন ধরনের সমস্যা হবে না। সাধারণত খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন করতে তেমন পানির প্রয়োজন পড়ে না।

শুধুমাত্র হাসের ঠোঁট পরিষ্কার রাখতে অথবা ভেজাতে পানির প্রয়োজন হয়। এখন হয়তো আপনি ভাবতে পারেন পানিতে খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন না করলে হয়তো ডিম অথবা প্রজননের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে আমি আপনাদের বলি একদমই না। বরং পানিতে না থাকার কারণে হাঁসের প্রজনন ক্ষমতা এবং ডিম দেয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

কারণ পানিতে সাঁতার না কাটলে অতিরিক্ত শক্তির ক্ষয় হয় না। তাহলে আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন। চলুন আরো কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের খাদ্য

হাঁসের লাভজনক খামার ব্যবস্থাপনা এবং সঠিক ওজন ও ডিম উৎপাদনের জন্য সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরী। সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা মেনে চললে হাঁস পালনে লাভবান হওয়া যায়। আমি নিচে খাকি ক্যাম্বেল হাঁসের খাবার তালিকা তুলে ধরলাম। যেমন,

মূলত ওপরের তালিকা অনুসারে আপনি যদি হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারেন তাহলে অবশ্যই হাঁসের সঠিক ওজনের পাশাপাশি ভালো ডিম উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকবে। তাই ব্যবসায় লাভবান হতে অবশ্যই উপরের তালিকাটি মেনে চলুন।

হাঁসকে কিভাবে খাবার দিতে হয়

মূলত আপনি হাঁসের খাবারগুলোকে হালকা পানিতে ভিজিয়ে হাঁসের নির্দিষ্ট খাবার পাত্রে খাবার প্রদান করতে পারেন। আপনি আবদ্ধ পদ্ধতিতে পালন করুন অথবা খোলা পদ্ধতিতে পালন করুন দুইক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে। কারণ আপনারা অনেকেই দেখে থাকবেন হাস খাবার খাওয়ার পর পানিতে নিজের ঠোঁট চুবায়।

যদি আপনি আবদ্ধ পদ্ধতিতে পালন করেন তাহলে প্রতিদিন অন্তত তিনবার খাবার প্রদান করতে হবে এবং অবশ্যই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যাতে করে খাবার এবং পানির পাত্র পরিষ্কার থাকে। কারণ খাবার পানির পাত্র নোংরা হয়ে থাকলে সেখান থেকে বিভিন্ন রোগের উৎপত্তি হতে পারে।

হাঁসের খাদ্যের পরিমাণ

আপনি যদি পুকুর অথবা জলাশয়ে হাস পালন করেন তাহলে খুব একটা খাবার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। আমি নিচে খাবারের পরিমাণ তুলে ধরলাম। যেমন,
  • আবদ্ধ অবস্থায় আট সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত - চার থেকে পাঁচ কেজি সুষম খাবার
  • ২০ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত - ১২ থেকে ১৩ কেজি সুষম খাবার
  • ডিম পাড়া অবস্থায় গড়ে প্রতিটি হাসির জন্য - ৫০ কেজি সুষম খাবার
  • ২০ সপ্তাহ বয়সের পরে ডিম পাড়ার ওপর নির্ভর করে - ১২৫ থেকে ১৫০ গ্রাম খাবার প্রতিদিন
মূলত হাঁসের বয়স ভেদে খাবারের পরিমাণ ওপরের নিয়ম অনুযায়ী হয়ে থাকে। তবে হাঁসের ডিমের উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে খাবারের পরিমাণ কম এবং বেশি হতে পারে।

হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন

শুরুতে আপনাদের জেনে রাখা উচিত যে, সাধারণত খাকি ক্যাম্বেল হাঁস ডিম দেওয়ার পর সেই ডিমে তা দেয় না। ঠিক এই কারণে আপনি বাচ্চা উৎপাদনের জন্য মুরগির ব্যবহার করতে পারেন। আপনি অনায়াসে ৮ থেকে ১০ টি ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করতে পারবেন মুরগির সাহায্যে।

খাদ্য উপাদান

০ থেকে ৩ সপ্তাহ (স্টাটার)

৪ থেকে ২০ সপ্তাহ (গ্রোয়ার)

২০ সপ্তাহ পর (লেয়ার)

মাছের গুঁড়া

৮.০০

৮.০০

৬.০০

ভূট্টা ভাঙ্গা

৬১.৫০

৬১.০০

৬৭.০০

শামুক-গুগলির খোলা ভাঙা

৩.০

সয়াবিন মিল

২৬.০০

১৬.০০

১৯.০০

লুসার্ন পাতা গুঁড়া

২.০০

২.৫০

২.৫০

খনিজ পদার্থের মিশ্রন

২.৫০

২.৫০

২.৫০

তবে অবশ্যই আপনাকে ৩৫ গ্রাম রোভিমিক্স অথবা ভিটাব্লেন্ড, ৫ গ্রাম নিয়াসিন এবং ৩৫ গ্রাম কোলিন ক্লোরাইড মেশাতে হবে প্রতি ১০০ কেজি খাবারের সাথে। যদি আপনার বাচ্চা উৎপাদনের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে তাহলে আপনি চাইলে ইনকিউবেটর ব্যবহার করে বাচ্চার উৎপাদন করতে পারেন।সে ক্ষেত্রে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন হতে সর্বোচ্চ ২৮ দিন সময় লাগতে পারে।

হাঁসের বাচ্চার যত্ন ও পরিচর্যা

শুরুতে বাচ্চা ফুটে যাওয়ার পর প্রথম ২৪ ঘন্টা অর্থাৎ একদিন বাচ্চাকে কোন প্রকারের খাবার না দিলেও চলবে। কিন্তু চব্বিশ ঘন্টা পর বাচ্চাকে খাবার প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি অল্প পরিমান পানিতে খাবারগুলো ভিজিয়ে নরম করে বাচ্চাদের খেতে দিতে পারেন। মূলত ছোট বাচ্চাদের যত্ন এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা খুবই জরুরী।

তবে আপনাকে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে বিষয়টি হচ্ছে, আপনি যখন বাচ্চাদের খাবার দিবেন ঠিক তখনই খাবারগুলো পানিতে ভিজিয়ে নরম করে নিবেন। তার কারণ আগে থেকে আবার ভিজিয়ে নরম করে রাখলে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু অথবা ছত্রাকের উৎপত্তি হতে পারে। যার কারণে বাচ্চারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই ছোট ছোট বাচ্চাদের ইঁদুরে আক্রমণ করে থাকে।

যার কারণে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে আপনার খামারে কোন প্রকারের ইঁদুর প্রবেশ করে আপনার বাচ্চাদের আঘাত করছে কিনা। এছাড়াও বাচ্চাকে রোগ মুক্ত রাখতে সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে হবে। সাধারণত বাচ্চা একটু বড় হয়ে গেলে আপনাকে পানির পাত্র দিতে হবে। তবে পানির পাত্র ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার এর মধ্যে রাখতে হবে যাতে করে বাচ্চারা পানির মধ্যে না ডুবে যায়।

বাড়ন্ত হাঁসের যত্ন

উপরের নিয়মগুলো মেনে চলার পর যখন দেখছেন আপনার খামারের বাচ্চার বয়স একমাস বা তার অধিক হয়ে গেছে। ঠিক তখন পানির পাত্রের মাপ বাড়িয়ে গভীরতা ১২ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার করতে হবে। যাতে করে হাঁসের বাচ্চারা পানির পাত্রে তাদের মাথা ডুবাতে পারে। এছাড়াও অবশ্যই আপনাকে হাঁসের হাঁসের বাচ্চাগুলোদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে জায়গা রাখতে হবে।

যাতে করে তারা গাদাগাদি ভাবে না থেকে একটু ফাঁকা ভাবে থাকতে পারে। আর প্রাকৃতিক আলো বাতাস ছাড়া হাঁসের বাচ্চাদের কোন প্রকারের বৈদ্যুতিক অথবা প্রাকৃতিক আলো প্রদান করতে হয় না।

ডিমপাড়া হাঁসের যত্ন

আপনি যদি সঠিক নিয়ম মেনে খামার ব্যবস্থাপনা তৈরি করেন তাহলে খাকি ক্যাম্বেল হাঁস প্রায় সাড়ে চার মাস বয়স থেকেই ডিম দিতে শুরু করে। আর হাঁস ডিম দিতে শুরু করলে অবশ্যই আপনাকে যত্ন নিতে হবে। এতে করে আপনাকে হাঁসের থাকার জায়গার পরেও বেশ কিছু জায়গা রাখতে হবে যাতে করে হাঁসগুলো ঘোরাফেরা করতে পারে।

আর আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যাতে করে হাঁসের সুষম খাবার এবং পরিষ্কার পানির অভাব না হয়। খাকি ক্যাম্বেল হাঁস ডিম দিতে শুরু করলে অবশ্যই আপনি প্রাকৃতিক আলো এবং বাতাসের বাহিরেও প্রতিদিন অন্তত দুই থেকে তিন ঘন্টা বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা করবেন। কারণ ডিম পাড়তে আলোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

যখন হাস ডিম পাড়া শুরু করবে তখন আপনাকে ৩০ সেমি x ৩০ সেমি x ৪৫ সেমি মাপের ডিম পাড়ার বাক্স দিয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি তিনটি হাঁসের জন্য একটি বাক্স প্রদান করতে পারেন। বাক্সের মধ্যে হাঁস যাতে ডিম পাড়ে এইজন্য খড় অথবা নরম ঘাস বাক্সের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। আর অবশ্যই প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে দুই থেকে তিনবার ঘাস এবং খড় পাতা পরিবর্তন করতে হবে।

খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস চেনার উপায় নিয়ে সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর FAQ

প্রশ্নঃ হাঁস পালনের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি কোনটি?
উত্তরঃ উন্মুক্ত পদ্ধতি।

প্রশ্নঃ খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস বছরে কত ডিম দেয়?
উত্তরঃ ২৯০ থেকে ৩০০টি।

প্রশ্নঃ খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের ডিমের রং কি?
উত্তরঃ সাদা।

প্রশ্নঃ হাঁস কত দিন বাঁচে?
উত্তরঃ ৬ থেকে ১০ বছর।

প্রশ্নঃ খাকি ক্যাম্পবেল কতদিন বাঁচে?
উত্তরঃ প্রায় ১৫ বছর।

প্রশ্নঃ খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের কতটুকু জায়গা প্রয়োজন?
উত্তরঃ বড় হাঁসের জন্য ১৫ বর্গফুট।

প্রশ্নঃ খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস কি ভালো মা?
উত্তরঃ একদমই না। এরা ডিমে তা দেয় না।

প্রশ্নঃ খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস কি শান্ত?
উত্তরঃ হ্যাঁ, শান্ত।

প্রশ্নঃ খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস কি কমলা পা আছে?
উত্তরঃ সাধারণত সমৃদ্ধ গাঢ় কমলা।

প্রশ্নঃ ১০টি হাঁসের খাঁচা কত বড়?
উত্তরঃ ৩০ বর্গফুট।

লেখক এর মন্তব্য

এই সম্পন্ন পোষ্টের মধ্যে আমি খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস চেনার উপায় এবং খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন পদ্ধতি সম্পর্কে সকল তথ্য আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আশা করি আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরে গেছেন এবং আপনার শখের লাভজনক আমার ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পেরেছেন।

এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন। যাতে করে আপনার বন্ধুরাও তাদের কাঙ্খিত তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে এবং লাভজনক খাকি ক্যাম্বেল হাঁসের খামার তৈরি করতে পারে। সর্বশেষ নিত্য প্রয়োজনীয় এরকম তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url