ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির চার্ট - ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির ঔষধ

বর্তমান বাজারে বয়লার মুরগির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যার কারণে মানুষেরা বয়লার মুরগি পালনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ আছেন যারা ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির চার্ট সম্পর্কে তথ্য খুঁজে বেড়ানোর পরও সঠিক তথ্য খুঁজে পান না। তাহলে এই সম্পূর্ণ পোস্টটি আপনার জন্য। এই সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমি ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির চার্ট এবং ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির ঔষধ সম্পর্কিত সকল তথ্য উপস্থাপন করব।
ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির চার্ট - ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির ঔষধ
তাই আপনি যদি সঠিক তথ্য জেনে বয়লার মুরগি পালনে লাভবান হতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের সাথেই থাকুন।

ভূমিকা

আমরা হয়তো অনেকেই জানি না ব্রয়লার মুরগির সঠিক ওজন বৃদ্ধির চার্ট মুরগির সঠিক ওজন নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের বর্তমান বাজারে ব্রয়লার মুরগি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে। এক্ষেত্রে মুরগির দ্রুত বৃদ্ধির জন্য, সঠিক খাদ্য এবং ওজন বৃদ্ধির ঔষধ প্রয়োগ করা খুবই প্রয়োজন। বয়লার মুরগি পালনের ক্ষেত্রে সঠিক চাট খুবই জরুরী। কারণ সঠিক চার্টের মাধ্যমে সঠিক ওজন নির্ধারণের পাশাপাশি সময়মতো ঔষধ প্রয়োগ করে মুরগির স্বাস্থ্য এবং বৃদ্ধি বিকাশ খুব সহজে নিশ্চিত করা সম্ভব।

তবে সঠিক খাদ্যের মান তার সাথে সাথে সঠিক ঔষধ ব্যবহার করলে মুরগির ওজন দ্রুত বৃদ্ধি করা সম্ভব। আর মুরগির ওজন বৃদ্ধি পেলে ব্যবসায় লাভের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। তাই সঠিক তথ্য উল্লেখ করতে এই সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমি ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির চার্ট আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করব। চলুন শুরু করা যাক।

ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির চার্ট

ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির চার্ট একজন খামারির জন্য জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি সঠিকভাবে মুরগির বৃদ্ধির পর্যবেক্ষণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন খামারি উক্ত চার্ট ব্যবহার করে প্রতি সপ্তাহের ওজন সম্পর্কে ধারণা রাখতে পারেন। তাই সঠিক ওজন বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অবশ্যই চার্টটি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। চলুন দেখে নেয়া যাক সঠিক চার্ট।

প্রথম সপ্তাহ

প্রথম সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির চার্ট অনুযায়ী মুরগীর ওজন ঠিক কতটা হওয়া উচিত তা নিজে উল্লেখ করা হলো,
  • প্রথম দিনঃ  ৪০-৪৫ গ্রাম
  • তৃতীয় দিনঃ  ৬৫-৭০ গ্রাম
  • সপ্তম দিনঃ  ১৪০-১৫০ গ্রাম

দ্বিতীয় সপ্তাহ

পরবর্তীতে দ্বিতীয় সপ্তাহে মুরগির দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকে। যেমন,
  • নবম দিনঃ ২০০-২২০ গ্রাম
  • ১২তম দিনঃ ৩০০-৩২০ গ্রাম
  • ১৪ তম দিনঃ ৪০০-৪৫০ গ্রাম

তৃতীয় সপ্তাহ

সাধারণত তৃতীয় সপ্তাহে মুরগির সঠিক ওজন আসা শুরু করে। সঠিক ওজন নিচে তুলে ধরা হলো,
  • ১৭ তম দিনঃ ৫৫০-৬০০ গ্রাম
  • ২০ তম দিনঃ ৭০০-৭৫০ গ্রাম
  • ২১ তম দিনঃ ৮৫০-৯০০ গ্রাম

চতুর্থ সপ্তাহ

চতুর্থ সপ্তাহে মুরগির সঠিক ওজনের চার্ট তুলে হোল,
২৫ তম দিনঃ ১০০০-১০৫০ গ্রাম
২৮ তম দিনঃ ১২০০-১২৫০ গ্রাম
৩০ তম দিনঃ ১৩০০-১৩৫০ গ্রাম

আমি উপরে বয়লার মুরগির সঠিক ওজনের চার্ট তুলে ধরেছি। আশা করছি আপনি যদি উপরের চার্ট গুলো মেনে বয়লার মুরগি পালন করতে পারেন তাহলে আপনি মুরগির সঠিক ওজন পাবেন। এর পাশাপাশি অবশ্যই আপনাকে মুরগির সঠিক খাবার এবং সঠিক ওজন বৃদ্ধির ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। চলুন সে বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নি।

ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির ঔষধ

ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন ঔষধ ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি ঔষধ আমাদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে।যেমন, এন্টিবায়োটিক এবং ভিটামিন ও মিনারেল। তাই বয়লার মুরগিকে সঠিক ঔষধ ব্যবহারে ফলে ব্রয়লার মুরগির ওজন দ্রুত বৃদ্ধি করা সম্ভব। আমি নিচে বয়লার মুরগির দুইটি ওষুধ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করলাম।

এন্টিবায়োটিক

ব্রয়লার মুরগির সঠিক ওজন আনতে এন্টিবায়োটিক খুবই কার্যকর একটি ঔষধ।সাধারণত এন্টিবায়োটিক মুরগির শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মুরগির শরীরের সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করার ফলে এটি মুরগির পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। যার ফলে খুব তাড়াতাড়ি মুরগির ওজন বৃদ্ধি পায়। তাই মুরগির সঠিক ওজন আনতে অবশ্যই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করুন।এন্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা নিজে উল্লেখ করা হলো,
  • প্রথমতঃএন্টিবায়োটিক মুরগির খাদ্য হজম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • দ্বিতীয়তঃএটি মুরগির শরীরে পানিশূন্যতা কমাতে সাহায্য করে।
  • তৃতীয়তঃএন্টিবায়োটিক মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

ভিটামিন ও মিনারেল

আমরা হয়তো অনেকেই জানি না ভিটামিন ও মিনারেল মুরগির ওজন বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর কারণ ভিটামিন এবং মিনারেল মুরগির শারীরিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তার পাশাপাশি  মুরগির হাড় ও পেশি শক্ত করতে সাহায্য করে থাকে। চলুন এবার নিচে দেখে নেওয়া যাক ভিটামিন ও মিনারেল কি কি উপকার করে। যেমন,
  • ভিটামিন এ মুরগির চোখ এবং তার সাথে সাথে ত্বকের সুস্থতা রক্ষা করতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন ডি মুরগির শরীরের হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন ই মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • মিনারেল ক্যালসিয়াম সাধারণত মুরগির ডিম উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • ভিটামিন এবং মিনারেল মিশ্রিত খাদ্য মুরগির দ্রুত বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সাহায্য করে

বয়লার মুরগির কার্যকর খাদ্য পরিকল্পনা

ব্রয়লার মুরগির সঠিক ওজন বৃদ্ধির জন্য কার্যকর খাদ্য পরিকল্পনা খুবই জরুরী। সঠিক খাদ্য পরিকল্পনা ব্রয়লার মুরগির স্বাস্থ্য এবং ওজন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমি নিজে বয়লার মুরগির কার্যকর খাদ্য পরিকল্পনা তুলে ধরলাম। যেমন,

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য

মুরগির বৃদ্ধির জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত জরুরী। তার কারণ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে মুরগির মাংসপেশী বৃদ্ধি হয়। নিচে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গুলো উল্লেখ করা হলো,
  • সয়াবিন মিল
  • মাছের মাংস
  • মুরগির মাংস
  • ডাল ও বাদাম ইত্যাদি
তাই আমি বলব মুরগির সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অবশ্যই প্রতিদিনের খাবার তালিকায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখুন।
ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস যুক্ত খাবার
আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা যে,ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস মুরগির হাড় গঠন করার পাশাপাশি মুরগির শক্তি বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে সঠিক মাত্রায় ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস খাওয়ালে মুরগির স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। আমি নিচে কিছু ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ খাবার উল্লেখ করলাম,
  • চুনা পাথর
  • কাঁকড়া খোলস
  • মাছের হাড়
  • ডিমের খোলস

তাই বয়লার মুরগির সঠিক বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই উপরের তুলে ধরা খাবারগুলো প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখতে ভুলবেন না।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা

বয়লার মুরগী থেকে শুরু করে সকল মুরগির ক্ষেত্রে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর কারণ পরিষ্কার খামার এবং পরিস্কার খাঁচা মুরগির সুস্থতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুরগির খামার এবং খাঁচা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে মুরগির রোগ কম হওয়ার পাশাপাশি মুরগির সঠিক বৃদ্ধি বিকাশ হয়। আমি নিচে খামারের পরিছন্নতা তুলে ধরলাম,

খামারের পরিচ্ছন্নতা

নিয়মিত খামারের পরিছন্নতা ঠিক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আপনাকে নিয়মিত খামার পরিষ্কার করতে হবে। আপনি যেভাবে খামার পরিষ্কার করবেন সেই উপায়গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো,
  • প্রতিদিনঃ আপনি প্রতিদিন নিয়ম করে খামারের ময়লা এবং আবর্জনা সব সরিয়ে ফেলে খামার পরিষ্কার রাখুন।
  • সাপ্তাহিকঃ অন্তত প্রতি সপ্তাহে একবার আপনার খামারের জমি এবং মেঝে পরিষ্কার করার চেষ্টা করুন।
  • মাসিকঃ প্রতি মাসে অন্তত একবার খামারের সকল সরঞ্জামকে জীবাণুমুক্ত করার চেষ্টা করুন।

মুরগির খাঁচার পরিচ্ছন্নতা

মুরগির খাঁচা পরিছন্নতা মুরগির সঠিক বৃদ্ধির পাশাপাশি মুরগির রোগ প্রতিরোধ করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমি নিচে মুরগির খাঁচা পরিষ্কার করার সঠিক পদ্ধতি তুলে ধরলাম,
  • প্রতিদিন নিয়ম করে খাঁচার ময়লা এবং সকল আবর্জনা সরিয়ে ফেলুন।
  • খাঁচার ভিতরে সব সময় খাদ্য এবং পানির পাত্র পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন।
  • প্রতিসপ্তাহে অন্তত একবার খাঁচার মেঝে এবং দেওয়াল পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন।
  • প্রতি মাসে অন্তত একবার খাঁচার প্রত্যেকটি অংশ জীবাণুমুক্ত করুন।

আমরা হয়তো সবাই জানি যে মুরগির খামার পরিষ্কার রাখলে মুরগির রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাওয়ার পাশাপাশি মুরগির সঠিক বৃদ্ধি বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন আরো কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

জল ও পানীয় ব্যবস্থা

আমরা অনেকেই জানি ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির জন্য সঠিক জল ও পানীয় ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মুরগির স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে বিশুদ্ধ পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।এক্ষেত্রে সঠিক পানীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি সঠিক ওজন আনা সম্ভব। চলুন সঠিক পানীয় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

বিশুদ্ধ পানি

মূলত মুরগির জন্য বিশুদ্ধ পানি অপরিহার্য। বিশুদ্ধ পানি মুরগির দেহকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। যার কারণে মুরগির শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। তার পাশাপাশি প্রতিদিনের খাবার হজমে সাহায্য করে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি যদি দূষিত পানি ব্যবহার করেন তাহলে মুরগির রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়ে যায়। তাই মুরগিকে সুস্থ রাখতে অবশ্যই বিশুদ্ধ এবং জীবাণুমুক্ত পানি পান করান।

পানি সরবরাহের পদ্ধতি

আমি নিচে পানি সরবরাহ করার কয়েকটি ব্যবস্থা তুলে ধরলাম। যেমন,
  • স্বয়ংক্রিয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থাঃ মূলত উক্ত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময় পর পর পানি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এতে করে মুরগির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পাওয়া যায়।
  • হাত দ্বারা পানি সরবরাহঃ উক্ত পদ্ধতিতে নিয়মিত পরিষ্কার ও তাজা পানি সরবরাহ করা হয়। তবে এই পদ্ধতিতে একটু বেশি পরিশ্রম এবং সময় ব্যয় করতে হয়।
  • পানি ফিল্টারঃ আমরা সকলেই জানি পানিকে বিশুদ্ধ করার জন্য ফিল্টার ব্যবহার করা হয়।এতে করে পানি দূষণ এবং জীবাণুমুক্ত হয়।
তাই পরিশেষে বলবো মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং মুরগির সঠিক ওজন আনতে সঠিক পানি ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই মুরগিকে বিশুদ্ধ এবং জীবানুমুক্ত পানি পান করানোর চেষ্টা করবেন।

            পদ্ধতি                                               বর্ণনা

স্বয়ংক্রিয় পানি সরবরাহ      নির্দিষ্ট সময় অন্তর পানি সরবরাহ করে 
হাত দ্বারা পানি সরবরাহ      নিয়মিত পরিষ্কার ও তাজা পানি সরবরাহ করে
পানি ফিল্টার                       পানিকে বিশুদ্ধ করে জীবাণু ও দূষণ দূর করে

আলোর প্রয়োজনীয়তা

বয়লার মুরগির সঠিক বৃদ্ধি বিকাশ করতে আলোর প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা যে আলোর সঠিক ব্যবহার মুরগির বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। চলুন আলোর সময়সূচি সম্পর্কে জেনে নেয়া যা্ক।

আলোর সময়সূচী

মুরগির জন্য আলোর সময়সূচী খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সঠিক সময়সূচী মেনে চললে মুরগির ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে। নিচে আমি আলোর সময়সূচি উল্লেখ করে দিলাম,

দিন                     আলো                   অন্ধকার

১-৩ দিন           ২৪ ঘণ্টা                   ০ ঘণ্টা
৪-৭ দিন           ২৩ ঘণ্টা                   ১ ঘণ্টা
৮-১৪ দিন        ২০ ঘণ্টা                    ৪ ঘণ্টা
১৫ দিন থেকে  ১৮ ঘণ্টা                   ৬ ঘণ্টা

আলোর প্রকার

মুরগি পালনের ক্ষেত্রে আলোর প্রকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুরগি পালন এবং মুরগির বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সঠিক আলোর প্রকার নির্বাচন করা খুবই জরুরী। আমি নিজে সঠিক আলোর প্রকার উল্লেখ করলাম,
  • সাদা আলোঃ মূলত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাদা আলো ব্যবহার করা হয়। সাদা কালো মুরগির খাদ্য গ্রহণ বাড়াতে সাহায্য করে।
  • নীল আলোঃ সাধারণত নীল আলো মুরগীকে শান্ত করতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।মুরগির ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে নীল আলো।
  • লাল আলোঃ মুরগির যে আক্রমণাত্মক আচরণ থাকে সেই আচরণকে কমাতে লাল আলো ব্যবহার করা হয়। লাল আলো মুরগির আক্রমণাত্মক আচরণ কমানোর পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
তাই মুরগি পালন করতে গেলে অবশ্যই সঠিক আলোর পদ্ধতি ব্যবহার করে মুরগি পালন করা উচিত।

মুরগির স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ

আপনি যদি বয়লার মুরগি পালন করে থাকেন তাহলে মুরগির স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তার কারণ সঠিক স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ছাড়া মুরগির ওজন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। চলুন মুরগির স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

নিয়মিত চেকআপ

মুরগির স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করতে মুরগির নিয়মিত চেকআপ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কে দেখতে হবে আপনার মুরগির শারীরিক অবস্থা ঠিক আছে কিনা এবং মুরগি সুস্থ আছে কিনা।আমি নিচে মুরগির চেকআপ করা কিছু উপায় তুলে ধরলাম,
  • মুরগির ওজন মাপা
  • খাবার খাওয়ার পরিমাণ দেখা
  • বর্জ্য নিরীক্ষণ
  • মুরগির চঞ্চলতা পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি

স্বাস্থ্যগত সমস্যা সমাধান

মুরগির স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা থাকলে সেগুলোর সমাধান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি মুরগির স্বাস্থ্যগত সমস্যা ঠিক করতে চান তাহলে নিচের পদ্ধতিগুলো মেনে চলতে পারেন। যেমন,
  • মুরগির খাবারে পরিবর্তন আনা
  • প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রয়োগ করা
  • পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা
  • মুরগির থাকার পরিবেশ পরিষ্কার রাখা
সমস্যা                                     সমাধান

অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস     পুষ্টিকর খাবার দেওয়া
অসুস্থতা                             প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রয়োগ করা

ব্রয়লার মুরগির সঠিক যত্ন

ব্রয়লার মুরগির সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক যত্ন মুরগির দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আমি নিতে বয়লার মুরগির সঠিক যত্ন নেওয়ার উপায় তুলে ধরলাম ,

বাচ্চা মুরগির যত্ন

বাচ্চা মুরগির যত্ন নিতে আপনাকে বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন,
  • পর্যাপ্ত তাপমাত্রাঃ বাচ্চা মুরগির ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ৩৫-৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রাখতে হবে।
  • পরিষ্কার পানীয় জলঃ বাচ্চা মুরগি খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়ে যার কারণে বাচ্চা মুরগিকে সবসময় পরিষ্কার পানি দিতে হবে।
  • উপযুক্ত খাদ্যঃ বাচ্চা মুরগিকে অবশ্যই উপযুক্ত খাবার দেওয়া খুবই জরুরী। এক্ষেত্রে আপনি বাচ্চা মুরগীদের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য খাওয়াতে পারেন।
  • নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাঃ বাচ্চা মুরগি খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়ে। যার কারণে মুরগির খাঁচা ও আশেপাশের এলাকা সব সময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করবেন।

পূর্ণবয়স্ক মুরগির যত্ন

অন্য বয়স্ক মুরগির যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কয়েকটি বিষয়ের দিকে লক্ষ্য করতে হবে। যেমন,
  • সঠিক খাদ্যঃ একজন পূর্ণবয়স্ক মুরগিকে সঠিক খাদ্য প্রদান করা খুবই জরুরী। যার কারণে আপনি পূর্ণবয়স্ক মু মুরগীদের প্রোটিন এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াবেন।
  • পর্যাপ্ত স্থানঃ মুরগি বড় হওয়ার সাথে সাথে তাদের একটু বেশি জায়গার প্রয়োজন হয়। তাই পূর্ণবয়স্ক মুরগির জন্য অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে জায়গা রাখতে হবে।
  • পরিষ্কার পানিঃ মুরগিকে সবসময় পরিষ্কার পানি দিতে হবে।
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাঃপূর্ণবয়স্ক মুরগির স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা করা খুবি জরুরি।

লেখক এর মন্তব্য

এই সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমি ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির চার্ট সম্পর্কিত সকল তথ্য আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আশা করি আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত তথ্য সম্পর্কে জানতে পেরে গেছেন। এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন এবং নিত্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url