চন্দন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
প্রিয় পাঠক আপনি হয়তো চন্দন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় জানতে চাচ্ছেন কিন্তু সঠিক তথ্য কোথাও খুজে পাচ্ছেন না।তাহলে এই সম্পূর্ণ পোস্ট শুধু মাত্র আপনার জন্য। কারন, আজকের সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমি চন্দন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় তুলে ধরব।
তাই আপনি যদি সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে চন্দন দিয়ে ফর্সা হতে চান তাহলে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন।
ভুমিকা
রূপচর্চার ক্ষেত্রে সব থেকে জনপ্রিয় উপাদান হচ্ছে চন্দন।ত্বক সুন্দর করতে তুলতে চন্দনের ব্যবহার খুবই কার্যকরী। আজকের সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমি চন্দন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং মুখে চন্দন ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে সকল তথ্য বিস্তারিত ভাবে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব।তাই আপনি যদি সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে চন্দনের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
চন্দন মুখে দিলে কি হয়
চন্দন মুখে দিলে চন্দনে থাকা উপাদান প্রাকৃতিক ভাবে আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।এর পাশাপাশি চন্দন মুখে ব্যবহার করার ফলে ত্বকের বলি রেখা দূর হয়ে যায়।নিয়মিত চন্দন মুখে দিলে ত্বকের জেল্লা বৃদ্ধি করার সাথে সাথে এটি আমাদের মুখের ব্রনের সমস্যা দূর করে দেয়।যারা অতিরিক্ত ব্রনের সমস্যায় ভুগেন তারা ব্রন দূর করতে চন্দন নিয়মিত মুখে লাগাতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ গোলাপ জল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
এগুলোর পাশাপাশি আপনি যদি নিয়মিত ত্বকে চন্দন ব্যবহার করেন তাহলে মুখের কালো দাগ দূর হওয়ার সাথে সাথে আপনার চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।চন্দন মুখে দিলে মুখের তেলতেলে ভাব দূর হয় এবং ত্বকে কোন ধরনের বয়সের ছাপ পড়ে না। এতে করে ত্বক অনেক কোমল হয়ে উঠে এবং ত্বক থাকে দাগ মুক্ত।
চন্দন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চন্দন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। নিয়মিত চন্দন ব্যবহার করলে ব্রণ থেকে শুরু করে ত্বকের কালো দাগ এমনকি বয়সে ছাপ দূর হয়ে যায়। আমরা অনেকেই দাগ দূর করতে অথবা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্যে বিভিন্ন ধরনের বিদেশি পণ্য ব্যবহার করি। পণ্যগুলি ব্যবহার করার ফলে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি তো পাইনা বরং পণ্যগুলি ব্যবহার করার কারণে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয়।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায়
আপনি যদি ত্বকের কোন প্রকার ক্ষতি না করে প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে চান তাহলে অবশ্যই সঠিক উপায়ে চন্দন ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে চন্দন প্রয়োগ করার সঠিক নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলো।
- প্রথম অবস্থায় প্রায় দুই চামচ চন্দন পাউডার নিন।
- দ্বিতীয়ত চন্দন পাউডারের সাথে দুই চামচ গরুর দুধ নিন।
- আপনার কাছে যদি গরুর দুধ না থাকে তাহলে বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে ছাগলের দুধ ব্যবহার করতে পারেন।
- সবার শেষে চন্দন পাউডার এবং গরুর দুধের সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর দিয়ে দিন।
- এর পরবর্তীতে গরুর দুধ, চন্দন পাউডার এবং লেবুর রস ভালোভাবে একটি পার্টিতে নিয়ে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে সুন্দরভাবে আপনার ত্বকে লাগান।
- লাগানোর পর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- ১৫ থেকে ২০ মিনিট অতিক্রান্ত হয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন।
আশা করি উপরে উল্লেখ করা নিয়ম অনুযায়ী চন্দন পাউডার ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের কালো দাগ দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে। ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরে আনতে উপরে তুলে ধরা নিয়ম অনুযায়ী পেস্ট তৈরি করে প্রতি সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চারবার ব্যবহার করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম
তাহলে আশা করি আপনি সঠিক ফলাফল দেখতে পাবেন। তবে উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে এবং ত্বকের দাগ দূর করতে ধৈর্য ধারণ করে থাকতে হবে। কারণ প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে গেলে সঠিক ফলাফল পেতে একটু সময় লাগে। যদিও বাজারে বিভিন্ন ধরনের পণ্য পাওয়া যায় যেগুলো খুবই দ্রুত ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে।
তবে উজ্জ্বলতা চিরস্থায়ী হয় না এবং পরবর্তীতে ত্বকের বিভিন্ন ক্ষতি হয়। তাই চিরস্থায়ী ভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে প্রাকৃতিক জিনিস ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
মুখে চন্দন ব্যবহারের নিয়ম
অনেক সময় আমাদের মুখে ব্রনের কালো দাগ এবং বয়সের কালো ছাপ পড়ে। আবার মুখে অতান্ত তেল থাকার কারনে মুখ কালো হয়ে যায়।আর এই দাগগুলো দূর করতে চন্দন খুবি কার্যকরী।মূলত এই অংশে আমি মুখে চন্দন ব্যবহারের নিয়ম আপনাদের জানাবো।মুখে চন্দন ব্যবহারের সঠিক নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলো,
তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে
আপনার যদি ত্বক অতিরিক্ত পরিমাণে তৈলাক্ত থাকে অথবা আপনার ত্বক শুষ্ক না থাকে তাহলে নিচে তুলে ধরা পদ্ধতি অনুযায়ী চন্দন ব্যবহার করতে পারেন। যেমন,
- প্রথমে দুই চামচ চন্দন পাউডার নিন।
- চন্দন পাউডারের সাথে এক চামচ মধু দিন।
- তৃতীয় উপাদান হিসেবে হাফ চামচ লেবুর রস নিন।
- উপাদান তিনটি ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে সমস্ত মুখে পেস্ট লাগিয়ে নিন।
- পেস্ট লাগানোর পরে সম্পূর্ণ মুখ ভালো করে মাসাজ করুন।
- এমনভাবে মাসাজ করুন যাতে ত্বকের ওপরে থাকা তেল এবং ময়লা উঠে আসে।
- মাসাজ করার শেষ পর্যায়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে ফেলুন।
শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে
যদি আপনার ত্বক অত্যন্ত শুষ্ক হয়ে থাকে তাহলে অন্য পদ্ধতিতে চন্দন ব্যবহার করতে পারেন। আমি নিচে শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে চন্দন ব্যবহারের নিয়ম উল্লেখ করলাম।
- দুই চামচ চন্দন পাউডার নিন।
- এর সাথে তিন থেকে চার চামচ গরুর দুধ নিন।
- দুইটি উপাদান ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- পেস্ট তৈরি হয়ে যাওয়ার পর ভালো করে সম্পূর্ণ ত্বকে লাগান।
- লাগানোর পর একটু মাসাজ করে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন।
- নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে নিন।
সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে
যদি আপনার ত্বক সংবেদনশীল হয়ে থাকে। অর্থাৎ আপনার ত্বকের ক্ষেত্রে খুবই সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। এক্ষেত্রে চন্দন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সর্ব প্রথম আপনাকে ২ চামচ চন্দন পাউডার নিতে হবে এবং পাউডার এর সাথে পরিমাণ মতো টক দই নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করতে হবে। পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে। সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনার সংবেদনশীল ত্বক হলে চন্দন এবং টক দইয়ের পেস্টটি ব্যবহার করার পর ত্বকে মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। বাজার থেকে ভেজাল যুক্ত মশ্চারাইজার না কেনে আপনি খুব সহজে গোলাপ জল, জল পায়ে তেল এবং গ্লিসারিন ব্যবহার করে ঘরে সে মশ্চারাইজার তৈরি করে ফেলতে পারেন। সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিনবার চন্দন পাউডার এবং টক দই এর পেস্ট ব্যবহার করুন।
চন্দনের উপকারিতা
চন্দনের উপকারিতা প্রচুর রয়েছে যেগুলো আমার মনে হয় না যে বলে শেষ করা যাবে। তবে কিছু উপকারিতা আপনাদের জানানোর ক্ষেত্রে নিচে উল্লেখ করছি। যেমন,
- ত্বকের কালো দাগ দূর করে।
- ত্বকের প্রদাহ কমায়।
- ত্বকের জেল্লা বাড়ে।
- প্রাকৃতিক ভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
- ব্রণের কালো দাগ দূর করে।
- ব্রণের সমস্যা দূর করে।
- ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করে।
- ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করে।
- ত্বককে কোমল করে তোলে।
- ত্বক দাগ মুক্ত থাকে।
- ত্বক থেকে ক্ষতিকর পদার্থ দূর হয়ে যায়।
- এছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে যায় ইত্যাদি।
চন্দনের ক্ষতিকর দিক
পৃথিবীতে প্রায় যতগুলো জিনিস রয়েছে সবগুলোরই একটি ভালো দিক এবং অপরটিক খারাপ দিক রয়েছে। তবে যদি আপনি সঠিক পদ্ধতি অনুযায়ী চন্দন ব্যবহার করতে পারেন তাহলে তেমন কোনো ক্ষতি হয় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তাদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে যদি আপনার অ্যালার্জি থাকে এবং আপনি চন্দন ব্যবহার করার পর কোন ক্ষতিকর দিক লক্ষ করেন তাহলে, চন্দন ব্যবহার করা বন্ধ করে দিতে হবে।
কারণ গবেষণায় দেখা গেছে যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তাদের চন্দনে এলার্জি থাকতে পারে। আর এলার্জি থাকা অবস্থায় চন্দন ব্যবহার করলে ত্বক জ্বালাপোড়া অথবা চুলকাতে পারে। তাই আমার মতে সর্বপ্রথম পরীক্ষামূলকভাবে চন্দন ব্যবহার করে দেখুন। যদি আপনার কোন ধরনের সমস্যা না হয় তাহলে ব্যবহার করুন এবং কোন সমস্যা দেখা দিলে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
ত্বকের যত্নে চন্দন তেল
প্রায় আদিকাল থেকে চন্দন তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। চন্দন তেল আমাদের ত্বকের জন্য খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। নিয়মিত চন্দন তেল ব্যবহার করার ফলে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যায়। চন্দন পাউডারের মতো চন্দন তেলও ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের কালো দাগ দূর করে। এছাড়াও তোকে ঘামাচির মত সমস্যা থাকলে চন্দন তেল ব্যবহার করলে খুবই তাড়াতাড়ি ঘামাচির সমস্যা দূর হয়ে যায়।
লেখক এর মন্তব্য
এই সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমি আপনাদের মাঝে চন্দন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং চন্দন ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে সমস্ত তথ্য বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আশা করি আপনি চন্দন দিয়ে ফর্সা হওয়ার সঠিক উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন। যাতে করে আপনার মত আপনার বন্ধুরাও তাদের কাঙ্ক্ষিত তথ্য সম্পর্কে জেনে উপকৃত হতে পারে। আর সর্বশেষ এরকম নিত্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url