দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা | গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর ঔষধ

প্রিয় পাঠক, দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা সম্পর্কে জেনে মুরগি পালনে লাভমান হতে চান তাহলে আপনি ঠিক জাইগাতেই আছেন। আজকের পোস্টের মধ্যে আমি দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা এবং দেশি মুরগি সংক্রান্ত সকল তথ্য তুলে ধরব।
দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা
তাই আপনি যদি সঠিক দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা সম্পর্কে জেনে মুরগির সকল রোগ দূর করতে চান তাহলে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন।

ভূমিকা

দেশি মুরগি পালন বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয়। তাদের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেশি মুরগির সঠিক যত্নের জন্য ঔষধের তালিকা জানা প্রয়োজন। দেশি মুরগির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিভিন্ন ঔষধ ব্যবহার করা হয়। এই ঔষধগুলো মুরগির নানা রোগ ও সমস্যার সমাধান করে। যেমন, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, প্যারাসাইট ইত্যাদি। সঠিক ঔষধ প্রয়োগ মুরগির উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। ঔষধ সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে মুরগির ক্ষতি হতে পারে।

তাই, দেশি মুরগির জন্য কোন ঔষধ প্রয়োজন, কিভাবে ব্যবহার করতে হবে, তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, এই ব্লগটি আপনাকে দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা এবং দেশি মুরগির সঠিক ঔষধ নির্বাচন করতে সাহায্য করবে। এবার চলুন, দেশি মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধের তালিকা জানি।

দেশি মুরগির স্বাস্থ্য

মুরগির রোগের সাধারণ কারণ

মুরগির বিভিন্ন রোগ হতে পারে। কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হলো,


  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব: অপরিষ্কার পরিবেশে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণ হয়।
  • ভুল খাদ্য: পর্যাপ্ত পুষ্টি না পেলে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
  • আবহাওয়া পরিবর্তন: ঠান্ডা বা গরম আবহাওয়ায় মুরগির শরীরে প্রভাব পড়তে পারে।
এছাড়াও, মুরগির রোগের আরও কিছু কারণ রয়েছে। যেমন,

কারণ - বিবরণ
অপর্যাপ্ত পানি - মুরগির পানির অভাব হলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে।
অপরিচিত পশু - অপরিচিত পশুদের মাধ্যমে রোগ ছড়াতে পারে।
ভ্যাকসিনের অভাব - ভ্যাকসিন না দিলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

স্বাস্থ্য বজায় রাখার উপায়

মুরগির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। প্রথমত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। নিয়মিতভাবে মুরগির খাঁচা ও আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে।


দ্বিতীয়ত, সঠিক খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করা উচিত। মুরগির সুষম খাদ্য ও পর্যাপ্ত পানি দিতে হবে। এটি তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও, ভ্যাকসিন এবং ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত।

মুরগির জন্য সঠিক ভ্যাকসিন ও ঔষধের তালিকা জানা গুরুত্বপূর্ণ। ভ্যাকসিনের সময়মত প্রয়োগ করতে হবে। মুরগির কোন অসুস্থতা দেখা দিলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ
  • সুষম খাদ্য ও পর্যাপ্ত পানি
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
  • ভ্যাকসিন ও ঔষধ প্রয়োগ
  • চিকিৎসকের পরামর্শ

দেশি মুরগির প্রধান রোগ

কোকিডিওসিস

কোকিডিওসিস মুরগির একটি সাধারণ এবং মারাত্মক রোগ। এটি মুরগির অন্ত্রে আক্রমণ করে এবং তাদের খাদ্য গ্রহণের ইচ্ছা কমিয়ে দেয়। ফলে দ্রুত ওজন কমে যায়।


কোকিডিওসিসের লক্ষণগুলো হলো,
  • খাদ্য গ্রহণের ইচ্ছা কমে যাওয়া
  • রক্তমিশ্রিত মলত্যাগ
  • অলসতা এবং উদাসীনতা
  • ওজন হ্রাস
এই রোগের চিকিৎসার জন্য কিছু কার্যকর ঔষধ ব্যবহার করা হয়। যেমন,

ঔষধের নাম -ব্যবহার
অ্যামপ্রোলিয়াম - খাবারের সাথে মিশিয়ে
সালফাডাইমেথোক্সিন - পানির সাথে মিশিয়ে
টোলট্রাজুরিল - প্রত্যেক মুরগির জন্য সরাসরি

এছাড়াও, মুরগির খামার পরিষ্কার রাখা এবং নিয়মিত জীবাণুনাশক ব্যবহার করা জরুরি। এটি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

নিউক্যাসল রোগ

নিউক্যাসল রোগ মুরগির আরেকটি সাধারণ এবং মারাত্মক রোগ। এটি ভাইরাসজনিত এবং খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। রোগটি শ্বাসযন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র এবং অন্ত্রকে আক্রমণ করে।


নিউক্যাসল রোগের লক্ষণগুলো হলো,
  • শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানি
  • গলা থেকে আওয়াজ বের হওয়া
  • ডিম উৎপাদনে হ্রাস
  • অস্থিরতা এবং মাথা কাঁপা
এই রোগের চিকিৎসার জন্য সাধারণত ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। যেমন,

ভ্যাকসিনের নাম - ব্যবহার
লাসোটা - পানির সাথে মিশিয়ে
এফ-স্ট্রেন - অনুনাসিক পথ দিয়ে

নিয়মিত ভ্যাকসিন প্রয়োগ এবং খামার জীবাণুমুক্ত রাখা এই রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ।

দেশি মুরগির প্রাকৃতিক ঔষধ

দেশি মুরগির অনেক রোগে প্রাকৃতিক ঔষধ ব্যবহার করা যায়। এই ঔষধগুলো সহজলভ্য এবং স্বাস্থ্যকর। প্রাকৃতিক ঔষধ ব্যবহারে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না। এখানে কিছু প্রাকৃতিক ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো যা দেশি মুরগির জন্য উপকারী।

হলুদ ও আদা

হলুদ এবং আদা মুরগির রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর। হলুদে আছে কারকিউমিন যা প্রাকৃতিক এন্টি-ইনফ্লেমেটরি। আদা প্রাকৃতিক এন্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং এন্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান সমৃদ্ধ।
  • হলুদ পাউডার পানিতে মিশিয়ে মুরগির পানিতে দিন।
  • আদা কুচি করে মুরগির খাবারে মিশিয়ে দিন।
এভাবে ব্যবহারে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।

উপাদান - ব্যবহার পদ্ধতি
হলুদ পাউডার - পানিতে মিশিয়ে পান করান
আদা কুচি - খাবারে মিশিয়ে দিন

প্রতিদিন এই প্রাকৃতিক ঔষধ মুরগিকে দিলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

নিম পাতার ব্যবহার

নিম পাতা প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নিম পাতায় আছে এন্টি-ব্যাক্টেরিয়াল, এন্টি-ফাঙ্গাল এবং এন্টি-প্যারাসাইটিক উপাদান।


মুরগির বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে নিম পাতার ব্যবহার খুব কার্যকর।
  • নিম পাতা কুচি করে মুরগির পানিতে মিশিয়ে দিন।
  • নিম পাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে মুরগির খাবারে মিশিয়ে দিন।
নিম পাতার ব্যবহার মুরগির অন্ত্রের প্যারাসাইট দূর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

উপাদান - ব্যবহার পদ্ধতি
নিম পাতা কুচি - পানিতে মিশিয়ে দিন
নিম পাতা গুঁড়া - খাবারে মিশিয়ে দিন

এই প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলো মুরগির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

দেশি মুরগির রাসায়নিক ঔষধ

এন্টিবায়োটিকের প্রকার

দেশি মুরগির জন্য বিভিন্ন প্রকারের এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। এই ঔষধগুলি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক। কিছু সাধারণ এন্টিবায়োটিকের তালিকা নিচে দেওয়া হলো,
  • অক্সিটেট্রাসাইক্লিন: এটি ব্রড-স্পেকট্রাম এন্টিবায়োটিক। এটি সাধারণত শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে ব্যবহৃত হয়।
  • এমোক্সিসিলিন: এটি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের জন্য কার্যকর। এটি প্রায় সব ধরনের সংক্রমণে ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • টাইলোসিন: এটি মাইকোপ্লাজমা সংক্রমণে ব্যবহৃত হয়। এটি মুরগির শ্বাসযন্ত্রের রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।
সঠিক ডোজ এবং ব্যবহারের সময়কাল মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে মুরগির শরীর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। এই কারণে, খামারিদের সবসময় অভিজ্ঞ পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ভ্যাকসিনের গুরুত্ব

ভ্যাকসিন দেশি মুরগির স্বাস্থ্য রক্ষায় একটি অপরিহার্য উপাদান। এটি মুরগির শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। ভ্যাকসিন মুরগিকে বিভিন্ন মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করে।


কিছু সাধারণ ভ্যাকসিনের তালিকা নিম্নরূপ,
  • নিউক্যাসল রোগের ভ্যাকসিন: এটি মুরগির নিউক্যাসল রোগ প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়।
  • গামবোরো রোগের ভ্যাকসিন: এটি মুরগির গামবোরো রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।
  • মারেক্স রোগের ভ্যাকসিন: এটি মুরগির মারেক্স রোগ প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়।
ভ্যাকসিনের সঠিক সময়ে প্রয়োগ করা খুবই জরুরি। খামারের সব মুরগিকে একই সময়ে ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত। এতে তাদের মধ্যে রোগের সংক্রমণ কমবে।

ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে মুরগির শরীরে প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই খামারিদের সবসময় সতর্ক থাকতে হবে।

দেশি মুরগির ঔষধের যথাযথ ডোজ

ঔষধের পরিমাণ

ঔষধের সঠিক পরিমাণ মুরগির ওজন এবং শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। সাধারণত, ভেটেরিনারিয়ানরা সঠিক ডোজ নির্ধারণ করেন। কিছু সাধারণ ঔষধ এবং তাদের ডোজ নিচে উল্লেখ করা হলো,

ঔষধের নাম - ডোজব্যবহার
অ্যান্টিবায়োটিক - 5-10 mg/kg - সংক্রমণ প্রতিরোধ
ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট - 1-2 ml/L পানিতে - পুষ্টির ঘাটতি পূরণ
ডিওয়ার্মার - 1-2 ml/kg - পরজীবী প্রতিরোধ

ঔষধের ডোজ নির্ধারণ করার সময় মুরগির বয়স ও স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা করতে হবে। অতিরিক্ত ডোজ দিলে মুরগির স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। অল্প ডোজ দিলে আবার রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী হবে না।

প্রয়োগের সময়

মুরগির ঔষধ প্রয়োগের সময় সঠিকভাবে পালন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি তাদের দ্রুত সুস্থতা নিশ্চিত করে। সাধারণত, ঔষধের প্রয়োগের সময় প্রয়োজন অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। কিছু সাধারণ নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলো,
  • অ্যান্টিবায়োটিক – সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিলে বা প্রয়োজন অনুযায়ী
  • ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট – সপ্তাহে ২-৩ বার
  • ডিওয়ার্মার – প্রতি ৩ মাসে একবার
ঔষধ প্রয়োগের সময় মুরগির খাওয়ার এবং পানির সময় বিবেচনা করা উচিত। অনেক ঔষধ খালি পেটে খাওয়ানো উচিত নয়। কিছু ঔষধ পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো হয়।

প্রয়োগের সময় সঠিক নির্দেশনা মেনে চললে মুরগির স্বাস্থ্যের উন্নতি দ্রুত হয়। ভুল সময়ে ঔষধ প্রয়োগ করলে মুরগির স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।

দেশি মুরগির খাদ্য

পুষ্টিকর খাদ্যের তালিকা

দেশি মুরগির জন্য পুষ্টিকর খাদ্য খুব জরুরি। ভালো খাদ্য মুরগির বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু পুষ্টিকর খাদ্যের তালিকা দেওয়া হলো,
  • ধান: ধান মুরগির প্রধান খাদ্য। এটি সহজলভ্য ও পুষ্টিকর।
  • গম: গম মুরগির শরীরে প্রোটিন সরবরাহ করে।
  • চাল: চাল মুরগির শক্তি বাড়ায়।
  • ভুট্টা: ভুট্টা মুরগির শরীরে কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে।
  • তিলের খৈল: তিলের খৈল মুরগির জন্য ভালো প্রোটিনের উৎস।

এসব খাদ্য মুরগির জন্য খুবই উপকারী। এগুলো নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত।

খাদ্য গ্রহণের নিয়ম

মুরগির খাদ্য গ্রহণের নিয়ম মানলে তাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। কিছু নিয়ম মানলে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

  • সঠিক সময়: মুরগিকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাদ্য দিতে হবে।
  • পরিমাণ: মুরগির বয়স ও ওজন অনুযায়ী খাদ্যের পরিমাণ ঠিক করতে হবে।
  • পরিস্কার পানি: মুরগিকে সবসময় পরিস্কার পানি দিতে হবে।
  • প্রতি সপ্তাহে: প্রতি সপ্তাহে খাদ্যের তালিকা পরিবর্তন করতে হবে।
এসব নিয়ম মেনে চললে মুরগি সুস্থ ও সবল থাকবে।

দেশি মুরগির রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ

রোগের প্রাথমিক লক্ষণ

মুরগির রোগের লক্ষণগুলো দ্রুত শনাক্ত করা জরুরি। কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখে রোগ বুঝতে পারবেন। যেমন,
  • অস্বাভাবিক আচরণ: মুরগি যদি অস্বাভাবিক আচরণ করে, উদাহরণস্বরূপ, কম খাওয়া বা কম চলাফেরা।
  • ডিম পাড়ার সমস্যা: ডিম কম পাড়া বা না পাড়া।
  • পালকের অবস্থা: পালক ঝরে যাওয়া বা পালক মলিন হওয়া।

এছাড়া,

  • শ্বাসকষ্ট: মুরগির শ্বাসকষ্ট হলে।
  • ডায়রিয়া: মুরগির ডায়রিয়া হলে।
  • চোখে পানি: চোখে পানি বা সর্দি দেখা দিলে।
উপরোক্ত লক্ষণগুলো লক্ষ্য করলে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। সঠিক ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।

উপসর্গ শনাক্তের পদ্ধতি

উপসর্গ শনাক্ত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

পদ্ধতি - বর্ণনা
দেহের তাপমাত্রা - মুরগির দেহের তাপমাত্রা মাপুন। উচ্চ বা নিম্ন তাপমাত্রা রোগের লক্ষণ।
চোখ ও নাক পরীক্ষা - চোখ ও নাক থেকে পানি বা সর্দি আসছে কিনা দেখুন।
মল পরীক্ষা - মল দেখে ডায়রিয়া বা রক্ত আছে কিনা পরীক্ষা করুন।

উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে রোগ শনাক্ত করা সহজ হবে।

সঠিক সময়ে সঠিক ঔষধ প্রয়োগ করলে মুরগি দ্রুত সুস্থ হবে।

দেশি মুরগির রোগ প্রতিরোধ করার উপায়

সাধারণ যত্নের উপায়

দেশি মুরগির স্বাস্থ্য রক্ষায় কিছু সাধারণ যত্নের উপায় অবলম্বন করা উচিত। এই পদ্ধতিগুলি মুরগির জীবাণু এবং রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
  • পরিষ্কার পরিবেশ: মুরগির খামার সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। নিয়মিত খামারের ময়লা পরিষ্কার করা জরুরি।
  • পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ: মুরগির পর্যাপ্ত পানি পান করতে দিতে হবে। এটা তাদের শরীরের কার্যকারিতা ঠিক রাখে।
  • সঠিক খাদ্য: মুরগির জন্য সঠিক পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। খাদ্যে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ থাকতে হবে।
  • বায়ুচলাচল: খামারে সঠিক বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এটি মুরগির শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ করে।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা

মুরগির স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি মুরগির কোন রোগ হলে দ্রুত শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

পরীক্ষা - তরঙ্গ
শরীরের তাপমাত্রা - সপ্তাহে একবার
ডিম উৎপাদন - প্রতিদিন
খাদ্য গ্রহণ - প্রতিদিন
রোগের লক্ষণ - নিয়মিত

মুরগির রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে। এতে মুরগির রোগের প্রাদুর্ভাব কমে যাবে।

সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন এবং উত্তর (FAQ)

প্রশ্নঃ মুরগি অসুস্থ হলে কি ঔষধ দিতে হয়?
উত্তরঃ চিকিৎসক এর নির্ধারিত করা অ্যান্টিবায়োটিক।

প্রশ্নঃ দেশি মুরগির ভ্যাকসিনের নাম কি?
উত্তরঃ দেশি মুরগির ভ্যাকসিনের নাম হলো,
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে - বি সি আর ডি ভি।
  • ২ মাস বা তার বেশি - আর ডি ভি। 
প্রশ্নঃ মুরগির কি ঔষধ লাগে?
উত্তরঃ অ্যান্টিবায়োটিক।

প্রশ্নঃ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন এর দাম কত?
উত্তরঃ প্রায় ১,০০০ টাঁকা।

প্রশ্নঃ মুরগি অসুস্থ হলে কি ঔষধ দেওয়া যায়?
উত্তরঃ রেনামাইসিনের মতোই টেট্রাসাইক্লিন ট্যাবলেট।

প্রশ্নঃ কোন রোগে মুরগি বেশি মারা যায়?
উত্তরঃ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা।

প্রশ্নঃ কোন মুরগি ডিম পাড়ে বেশি?
উত্তরঃ লেয়ার মুরগি।

প্রশ্নঃ মুরগি কত বছর বয়সে ডিম দিতে শুরু করে?
উত্তরঃ ৪ মাস বা তার বেশি।

প্রশ্নঃ মুরগির রানীক্ষেত রোগের জন্য দায়ী ভাইরাসের নাম কি?
উত্তরঃ এভিয়ান প্যারামিক্সোভাইরাস ১।

প্রশ্নঃ মুরগির ভাইরাস ঘটিত রোগ কোনটি?
উত্তরঃ নিউক্যাসল রোগ এবং রানীক্ষেত রোগ।

লেখকের মন্তব্য

আজকের এই সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে আমি আপনাদের মাঝে দেশি মুরগির ঔষধের তালিকা এবং দেশি মুরগির রোগ সম্পর্কে সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। এই সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে আশা করি আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। দাঁত ফাঁকা দূর করার ঘরোয়া উপায় সংক্রান্ত পোস্ট পড়ার পর যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বন্ধদের মাঝে শেয়ার করুন।

যাতে করে আপনার মতো আপনাদের বন্ধুরাও উক্ত পোস্ট পড়ে উপকৃত হতে পারে। আর সর্বশেষ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url